গণতন্ত্র না থাকায় ধনী-গরীব বৈষম্য বাড়ছে : নজরুল ইসলাম খান

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান আজ বুধবার নয়াপল্টনে বিএপির কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ছবি : বিএনপি মিডিয়া সেল

দেশে গণতন্ত্র না থাকার কারণেই ধনী-গরীবের বৈষম্য ক্রমশ বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সবার উন্নয়ন করার কথা চিন্তা করলে গণতন্ত্র ছাড়া কোনো পথ নাই। আর গণতন্ত্র নাই বলেই আজকে দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিষ্পেষিত আর হাতে গোনা কিছু মানুষ প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার বাড়ি কিনছে।

আজ বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএপির কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এই অভিযোগ করেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘শতকরা পাঁচ ভাগ মানুষ দেশের বিপুল পরিমাণ সম্পদ আত্মসাৎ করে নিয়ে যাচ্ছে। কারণ একটাই সেটা হলো যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সমর্থনের প্রয়োজন নেই সরকারের। ফলে তারা ভোটেই বিশ্বাস করে না। যদি ভোটের প্রয়োজন হতো তারা অবাধ ও ‍সুষ্ঠু নির্বাচন করতো, ৭ জানুয়ারির মতো একতরফা নির্বাচন হতো না।’

এই অবস্থার পরিবর্তনে ‘ভোটের অধিকার’ পুনঃপ্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম খান এজন্য সকলকে একতাবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলের প্রসঙ্গ টেনে দলের প্রথম শ্রম বিষয়ক সম্পাদক বলেন, ‘১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করলেন সেই নির্বাচনে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছিল। আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দল একসাথে মিলে ঐক্য করেছে এবং জেনারেল ওসমানীকে প্রার্থী করেছে জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে। জাস্টিস আবদুস সাত্তারের সময়ে যে নির্বাচন হয় সেখানেও ড. কামাল হোসেনকে আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী করেছে। শহীদ জিয়া ১৯৭৯ সালে যে সংসদ নির্বাচন করেছিলেন সেই সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছিল। বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে যে নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হন সেই নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করেছিল। অর্থাৎ কৌশলে অন্যদেরকে বাইরে রেখে কিংবা জোর-জবরদস্তি করে অন্যদেরকে নির্বাচনের বাইরে রেখে নেতা বা প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট হওয়ার ইতিহাস বিএনপির নাই।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘১৯৯৬ সালের নির্বাচন করতে হয়েছিল একটা বিশেষ কারণে এবং যে কারণে সেই নির্বাচন করতে হয়েছিলে সেই বিল পাস করেই বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ করেই এই অফিসের সামনে জনসভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। সুতরাং আজকে বাংলাদেশে প্রকৃত গণতন্ত্র নাই। আমরা গণতন্ত্রহীন অবস্থায় জীবনযাপন করছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে গণতন্ত্র আমরা অর্জন করেছিলাম আমাদের লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে সেই গণতন্ত্র আজ নেই।’

নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বিএনপির উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দোয়া মাহফিল হয়। এতে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বক্তব্য রাখেন। এর আগে সকালে বনানী কবরস্থানে আরাফাত রহমান কোকোর কবরে ফাতেহা পাঠ করে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ফিরোজসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। পরে তার মরদেহ দেশে এনে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।