ধর্ষণ মামলার দুই পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
ধর্ষণ মামলার দুই পলাতক আসামি ইব্রাহীম মোল্লা ও বাবুল মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে ইব্রাহীম ধর্ষণ মামলার সাজাপ্রাপ্ত এবং বাবুলের নামে মামলা হওয়ার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
আজ শুক্রবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-২-এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ও এএসপি খান আসিফ তপু ও র্যাব-১০-এর সহকারী পরিচালক (অপস) আমিনুল ইসলাম।
খান আসিফ তপু বলেন, শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা থানা এলাকায় এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ইব্রাহীম মোল্লা। তাকে বৃহস্পতিবার রাতে নেত্রকোনার কেন্দুয়া এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২ ও র্যাব-১৪।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল বিকেলে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের ভূঁইয়া বাজার এলাকার ৫৫ বছর বয়সী এক নারী। নিখোঁজের তিন দিন পর ২১ এপ্রিল তার বাড়ি থেকে দশ কিলোমিটার দূরের পূর্ব ডামুড্যা ইউনিয়নের বড় নওগাঁ এলাকার আব্দুর রহমান মাস্টারের বাড়ির পূর্ব পাশের একটি পরিত্যক্ত ডোবায় সেই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় হাত ভাঙা ও মাথায় আঘাতের ক্ষত ছিল। পরে নিহতের ছোট ভাই লাল মিয়া সরদার বাদী হয়ে ১৪ নামে আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলা হওয়ার পর নিজাম বালী, ওমর ফারুক ও মোহাম্মদ আলী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়।
র্যাব জানায়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ইব্রাহীম মোল্লাসহ পাঁচজন আসামিকে করে আদালতে চার্জশিট দেন। বিচারকার্য শেষে আদালত তাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেন এবং প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করেন। সেই সাথে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর থেকে ইব্রাহীম মোল্লা দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন। তাকে ডামুড্যা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে ফরিদপুরের নগরকান্দার কুঞ্জিনগর এলাকা থেকে ভাঙ্গার ধর্ষণ মামলায় বাবুল মোল্লা নামে আরেক পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০। র্যাব-১০-এর সহকারী পরিচালক (অপস) আমিনুল ইসলাম।
আমিনুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ফরিদপুরের নগরকান্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা ছিল। বাবুল বিভিন্ন সময়ে ভাঙ্গা মহিলা কলেজের এক ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। ওই ছাত্রী রাজি হতেন না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তার বাড়িতে গিয়ে একা পেয়ে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ করেন। পরে মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে এবং বাবুলকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। এ ঘটনায় বাবুল মোল্লা ও তার আত্মীয়-স্বজনরা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন। কিন্তু সেই মেয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর বাবুলের বাড়িতে গেলে তাকে বিয়ে না করে মারধর করেন। এরপর মেয়েটিকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বড় ভাই বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন। সেই মামলায় বাবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি মামলার পর থেকে পলাতক ছিলেন ও বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।