কক্সবাজার সৈকতে ১২৫টি ডিম পেড়ে সাগরে ফিরল মা কচ্ছপ
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে একটি সামুদ্রিক কচ্ছপ ১২৫টি ডিম পেড়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে সৈকতের সোনারপাড়া এলাকায় অলিভ রিডলে প্রজাতির এই কচ্ছপটি ডিমগুলো পাড়ে। বালিয়াড়িতে প্রায় দুই ফুট গর্ত করে মা কচ্ছপটি ডিমগুলো পেড়ে আবারও সাগর ফিরে গেছে।
এই সৈকতের পাশেই রামুর পেঁচার দ্বীপে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট (বোরি) অবস্থিত। খবর পেয়ে এই প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা ডিমগুলো সংগ্রহ করেছেন।
গতকাল বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে এসব ডিম প্রজননের জন্য সোনারপাড়া সৈকতের বালিয়াড়িতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান বোরির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ। তিনি বলেন, ‘ডিমগুলো থেকে বাচ্চা ফোটাতে ৬০ থেকে ৬৫ দিন সময় লাগবে। এ সময়ে বোরির বিজ্ঞানীরা গবেষণার পাশাপাশি এই হ্যাচারিটি দেখভাল করবেন। হ্যাচারিতে ডিমগুলো প্রজননের জন্যে প্রায় দুই ফুটের দুটি গর্ত খোড়া হয়।’
ডিমগুলো সংরক্ষণের সময় ভারতের রাজকাঁকড়া বিশেষজ্ঞ ও জৈব সমুদ্র বিজ্ঞানী ড. গোবিন্দ চন্দ বিসওয়াল, বোরির জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম, সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য গবেষক আহমদ গিয়াস, বোরির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শিমুল ভুঁইয়াসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বোরির জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘অলিভ রিডলে প্রজাতির কচ্ছপটি ১২৫টি ডিম পেড়ে সাগরে ফিরে গেছে। গত বছর সৈকতের একই পয়েন্টে একটি কচ্ছপ ৯১টি ডিম পেড়েছিল। এই ডিম সৈকতের প্রাকৃতিক পরিবেশে সংরক্ষণ করে প্রজননের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সেখানে ৮৪টি সুস্থ-সবল কচ্ছপের বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হয়েছিল।’
তরিকুল ইসলাম জানান, প্রজনন মৌসুম শুরুর পর প্রতিবছর অক্টোবর থেকে সমুদ্রতীরে আসতে শুরু করে কচ্ছপ। এপ্রিল পর্যন্ত এরা ডিম পাড়ে।
গবেষণার কাজে কক্সবাজারে আসা ভারতের রাজকাঁকড়া বিশেষজ্ঞ ও জৈব সমুদ্র বিজ্ঞানী ড. গোবিন্দ চন্দ বিসওয়াল বলেন, ‘কচ্ছপের প্রজনন বাড়াতে জনসচেতনতা সবচেয়ে জরুরি।’
কক্সবাজারে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের পাশাপাশি পরিবেশবাদী সংস্থা নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টসহ (নেকম) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণ ও প্রজনন প্রক্রিয়ায় কাজ করছে।