জাবিতে ধর্ষণকাণ্ডের দায় এড়াতে পারে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ : র‌্যাব

Looks like you've blocked notifications!
র‌্যাব লোগো

‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারে না। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় মাদক, ধর্ষণসহ নানা অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় বহিরাগতদের প্রবেশের দায় কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।’ আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘আমাদের আগামী প্রজন্মকে জাহাঙ্গীরনগর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করার স্বপ্ন দেখি। এমনকি যারা মাদক কারবার, চোরাচালানসহ অবৈধ ব্যবসা করেন তারাও সন্তানকে বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করান। আমরা চাই আমাদের সন্তানরা লেখাপড়া করুক এবং সুশিক্ষায় শিক্ষিত হোক। সম্প্রতি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী বিষয়টি খুবই অ্যালার্মিং। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এখনই আরও কঠোর হতে হবে। কারণ আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। ক্যাম্পাসে মাদকসহ নানা অবৈধকাজ ঘটে। এই সব ঘটনা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয় রয়েছে। তারা যদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, সহযোগিতা চান, আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করব। আমরা মনে করি দেশের ভবিষ্যত সম্পদ, জাতির আগামীদিনের ভবিষ্যতকে এভাবে নষ্ট হতে দিতে পারি না।’

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৭ নম্বর কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে ঘটনার দিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চারজনকে আটক করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে ঢাকার আশুলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি গণধর্ষণ মামলা করেন। গতকাল বুধবার রাতে র‌্যাব-৪, র‌্যাব-২ ও র‌্যাব-৫-এর অভিযানিক দল রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মূল পরিকল্পনাকারী মামুনুর রশিদ ওরফে মামুন (৪৪) ও নওগাঁ সদর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অন্যতম আসামি মো. মুরাদকে (২২) গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা গণধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। এ ছাড়া মামুন এমন আরও ধর্ষণের সঙ্গে যুক্ত আছে বলেও জানিয়েছে।’

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, মামুন প্রায় ছয় থেকে সাত বছর মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মামুন কক্সাবাজারের টেকনাফ থেকে প্রতি মাসে কয়েক দফায় প্রায় সাত থেকে আট হাজার ইয়াবা সংগ্রহ করে। পরে তা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু মাদকসেবি শিক্ষার্থীকে সরবরাহ করতেন।’

খন্দকার মঈন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অপরাধে জড়ানোর বিষয় আগেই সতর্ক হওয়া দরকার ছিল। আমরা সবাইকে খারাপ বলব না। কারণ যারা এই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তারাই তো আগামী দিনে দেশ পরিচালনা করবে। তাই আমি মনে করি শুধু এখন না সব সময় তাদের নজরদারিতে রাখা উচিত। কারণ শিক্ষার্থীদের বয়স অনেক কম। এই ধরনের অপরাধী মামুনের মতো লোকজন শিক্ষার্থীদের নষ্ট করছে। মামুনের মতো লোকেরাই নিজেদের স্বার্থে, নিজেরাই অপকর্ম করার জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে। আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যারা আছে তাদের এমন করে বিপথে নেওয়ার দায় দায়িত্ব আমাদের সব স্টেক হোল্ডারদের নিতে হবে। অভিভাবক, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক সমাজ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গণমাধ্যমকে এর দায় নিতে হবে।