ভাষার চেতনাকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে : ডেপুটি স্পিকার

Looks like you've blocked notifications!
সাঁথিয়ায় স্বাধীনতা সোপান চত্বরে অমর একুশে বইমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু। ছবি : এনটিভি

জাতীয় সংসদেরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে জাতীয়তাবাদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

আজ রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের স্বাধীনতা সোপান চত্বরে শিল্পকলা একাডেমি, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আবৃত্তি সংসদের আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডেপুটি স্পিকার এ কথা বলেন।

ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুইবার ফাঁসির মুখোমুখি হয়েও নিজেদের অধিকার আদায়ে পরাজিত শাসক গোষ্ঠীর কাছে নতি স্বীকার করেননি।

ডেপুটি স্পিকার আরও বলেন, ‘এই ভাষার মাসেই আগরতলা মামলায় শাসক গোষ্ঠী প্রহসনের বিচারের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল তখন ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান ঘটে। ১৫ ফেব্রুয়ারিতে কুর্মিটোলা ক‌্যান্টনমেন্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশে গুলি করা হলে সেই গুলি সার্জেন্ট জহুরুল হকের বুকে লাগলে তিনি নিহত হন। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর সারা দেশের মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে, ছাত্র-জনতা রাস্তায় বেরিয়ে আসে এবং ‘সার্জেন্ট জহুরুল হকের হত‌্যার বদলা নেব, শেখ মুজিবকে মুক্ত করব’ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়।’

শামসুল হক টুকু বলেন, ‘শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হকের রক্তের ধারাবাহিকতায় বাংলার ছাত্র, যুবক, কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ফুঁসে উঠেছিল। এই হত্যার বিচার ও শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আমরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিলাম। সেখানে গুলি ও লাঠিচার্জে আহত ছাত্রের গায়ের রক্ত ড. শামসুজ্জোহার শার্টে লাগে। তিনি সেদিন একটি সভায় শার্ট খুলে দেখিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, আর যদি আমার ছাত্রের গায়ে গুলি করা হয় তাহলে সে গুলি আমার ছাত্রের গায়ে না লেগে আমার গায়ে লাগবে।’

ডেপুটি স্পিকার আরও যোগ করেন, আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে শাসকগোষ্ঠীর আধা সামরিক বাহিনীর উপর্যুপরি গুলি ও বেয়োনেটের আঘাতে ড. শামসুজ্জোহা শহীদ হন। ড. জোহার রক্ত ঝড়ায় জনতার রোষাণলে পড়ে ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আগরতলা মামলার সব আসামিকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২২ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে বাধ‌্য হয় এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ‌্যানে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. আলপনা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শাহ আযম, সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হাসান আলী খানসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।