তিউনিসিয়ায় নিহত আটজনের পাঁচজনই মাদারীপুরের, স্বজনদের আহাজারি

Looks like you've blocked notifications!
মাদারীপুর মানচিত্র

সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে মাদারীপুরের রাজৈরের পাঁচ যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে আরও একজন। পাঁচ যুবকের মৃত্যুর খবরে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

আদরের সন্তানদের হারিয়ে দিশেহারা পরিবারগুলো। কোনো সান্ত্বনাই থামাতে পারছে না স্বজনদের আহাজারি। মরদেহ দেশে আনার দাবি তাদের।

এই ঘটনায় দালালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের সহায়তা কামনা করছেন পরিবারের সদস্যরা।

পুলিশ বলছে, লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিহত যুবকরা হলেন উপজেলার শেনদিয়া গ্রামের সজল, কদমবাড়ি উত্তরপাড়া গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস,  সরমঙ্গল গ্রামের মামুন শেখ, বাজিতপুর নতুন বাজারের তেলিকান্দি গ্রামের কাজী মিজানুরের কাজী সজীব, কবিরাজপুর ইউনিয়নের কেশরদিয়া গ্রামের কায়সার।

স্বজনরা জানায়, গত ১৪ জানুয়ারি উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ ও সেনদিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগীসহ বেশ কয়েকজন যুবক ইতালির উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। পরে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বুধবার লিবিয়া থেকে ইতালির উদ্দেশে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় রওনা দেন তাঁরা। তিউনিসিয়ার ভূমধ্যসাগরে নৌকার ইঞ্জিন ফেটে যায়। এ সময় নৌকাডুবে মামুন ও সজলসহ মারা যান ১২ জন। পরে খবর পেয়ে বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় কোস্ট গার্ড।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মামুন ও সজলের মৃত্যুর খবরে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ব্যাংক ঋণ ও সুদে এনে দালালদের দেওয়া টাকা পরিশোধ করা নিয়েও দুশ্চিন্তায় স্বজনরা।

স্বজনদের অভিযোগ, মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদি ইউনিয়নের সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজীর ছেলে মোশারফ কাজী ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে নেন ১৩ থেকে ১৫ লাখ টাকা। পরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালি পাঠালে ঘটে এই দুর্ঘটনা। এই কাজে সহযোগিতা করেন মোশারফের ছেলে যুবরাজ কাজী। এমন ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর।

নিহত মামুনের বড়ভাই সজীব শেখ বলেন, ‘আমার ভাইকে যে নৌকায় উঠায়, সেটাতে ৫২ জন ছিল। এটার ধারণ ক্ষমতা ১২ থেকে ১৫ জন। অথচ, এত মানুষ একসঙ্গে উঠাইয়া আমার ভাইকে মেরে ফেলছে  দালাল। এই দালাল মোশারফের কঠিন বিচার চাই।’