শর্ত মেনে বেসরকারি মেডিকেল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালাতে হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। ফাইল ছবি

এখন থেকে সরকারের নির্দিষ্ট শর্ত মেনে বেসরকারি মেডিকেল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালাতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, কিছু অসাধু মানুষ সরকারের কোনোরকম নিয়মের তোয়াক্কা না করে শুধু ব্যবসায়িক স্বার্থের জন্য যত্রতত্র নামমাত্র হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। নিয়মের বাইরে গিয়ে তারা আর এগুলো চালাতে পারবে না।’

গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।  

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখনও ১২০০টির বেশি প্রাইভেট স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিবন্ধন নেই। এদের কাছে ভালো ডাক্তার নেই, নার্স নেই, টেকনিশিয়ান নেই। তাহলে এরা হাসপাতাল চালাচ্ছে কী দিয়ে? এরা রোগী পাচ্ছে কীভাবে? এগুলো আমাদেরকে ভাবতে হবে।’

সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, এরকম অনিবন্ধিত সকল স্বাস্থ্যকেন্দ্র দ্রুত বন্ধ করা হবে। আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে ১০টি বিশেষ নির্দেশনাসহ আদেশ দিয়েছি। এই অফিস আদেশ প্রত্যেকটি প্রাইভেট মেডিকেল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে অবশ্যই মেনে হাসপাতাল চালাতে হবে। আদেশ অমান্য করা হলে নিবন্ধন বাতিলসহ কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের নির্দেশে জারিকৃত বেসরকারি মেডিকেল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পালনীয় শর্তাবলীর মধ্যে রয়েছে—

১. বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকের লাইসেন্সের কপি উক্ত প্রতিষ্ঠানের মূল প্রবেশপথের সামনে দৃশ্যমান স্থানে অবশ্যই স্থায়ীভাবে প্রদর্শন করতে হবে।

২. সব বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্যাদি সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য একজন নির্ধারিত দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা, কর্মচারী থাকতে হবে এবং তার ছবি ও মোবাইল নম্বর দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।

৩. যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল হিসেবে আছে, কিন্তু শুধু ডায়াগনস্টিক অথবা হাসপাতালের লাইসেন্স রয়েছে তারা লাইসেন্স প্রাপ্তি ব্যতিরেকে কোনোভাবেই উল্লেখিত সেবা প্রদান করতে পারবে না।

৪. ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রে যে ক্যাটারগরিতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত শুধু সে ক্যাটাগরিতে নির্ধারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতীত কোনোভাবেই অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে না এবং ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিষ্ট্রি ও রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে।

৫. বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতালের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের প্রকারভেদ ও শয্যা সংখ্যা অনুযায়ী সব শর্তাবলী বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

৬. হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিযোজিত সব চিকিৎসকের পেশাগত ডিগ্রির সনদগুলো, বিএমডিসির হালনাগাদ নিবন্ধন ও নিয়োগপত্রের কপি অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।

৭. হাসপাতাল, ক্লিনিকের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের অপারেশন, সার্জারি, প্রসিডিউরের জন্য অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখতে হবে।

৮. কোনো অবস্থাতেই লাইসেন্স প্রাপ্ত, নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ব্যতীত চেম্বারে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেসথেশিয়া প্রদান করা যাবে না। বিএমডিসি স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ ছাড়া যেকোনো ধরনের অপারেশন বা সার্জারি করা যাবে না।

৯. সব বেসরকারি নিবন্ধিত, লাইসেন্স প্রাপ্ত হাসপাতাল বা ক্লিনিকে লেবার রুম প্রোটোকল অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

১০. নিবন্ধিত, লাইসেন্স প্রাপ্ত হাসপাতাল, ক্লিনিকে অপারেশন থিয়েটারে অবশ্যই এ সম্পর্কিত শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে।