দুনিয়ার মানুষ এই বিচার দেখছে : ড. মুহাম্মদ ইউনূস

Looks like you've blocked notifications!
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এ বিচার কার্যক্রম এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, দেশের মধ্যেও সীমাবদ্ধ নয়, সারা দুনিয়ার মানুষ লক্ষ্য করছে—এই বিচারে কী হলো। আমরা যা যা করছি তা সবই তারা দেখছে। আজ রোববার (৩ মার্চ) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় জামিন পাওয়ার পর  আদালত প্রাঙ্গনে এসব মন্তব্য করেন ড. ইউনূস।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এই যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার পক্ষে লিখুন, বিপক্ষে লিখুন কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু এটা রেকর্ডেড। জাতির ইতিহাসের একটা অংশ হয়ে যাবে। এটার জন্য কি আমরা গর্ববোধ করব, নাকি অপরাধবোধ করব? এরকম একটা সন্তানকে এমন অপরাধে অপরাধী কেনো করলাম? এগুলোর জবাব থেকে মুক্তি নেই। তিনি বলেন, আপনারা আজকের এই ছবিটা তুলে রাখুন। দুর্নীতি দমন কমিশনের বটতলা আমরা সবাই। এটা ঐতিহাসিক একটা ছবি। এটা আজকে-কালকে পত্রপত্রিকায় বের হবে। কিন্তু এটা যুগ যুগ ধরে নানা বইতে প্রকাশিত হবে।

এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, একজন নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে, জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ এনেছে। আমি একা নই। আমরা আরও সাতজন, যারা সারাজীবন কঠোর পরিশ্রম করেছে গরিব মানুষের জন্য। এরা কোনো চাকরি করতে এখানে আসেনি। তারাও অর্থ আত্মসাত, জালিয়াতির এবং মানি লন্ডারিংয়ের জন্য অভিযুক্ত।

সাংবাদিকদের ড. ইউনূস আরও বলেন, আপনারা আজকে এখানে উপস্থিত আছেন। আপনারা জন্ম-জন্মান্তর ধরে বলতে পারবেন যে, আমরা উপস্থিত ছিলাম সেখানে এবং কেনো ছিলেন, কী হয়েছে সেগুলো আপনারা বর্ণনা করবেন। এটা আমার মুখ থেকে শোনার দরকার নেই।  আপনারা যা নিজে মনে করবেন, তা আপনার পরের প্রজন্মকে জানাবেন। আগের প্রজন্মকে জানাবেন। যারা এখানে উপস্থিত হয়নি তাদের জানাবেন। আইন মানুষের শুভকামনা করে রচনা করা হয়। আইন মানুষের মনে স্বস্তি আনে, শান্তি আনে। আইন মানুষের মনে আশঙ্কাও জাগায়। ভয়ংকর শঙ্কা জাগায়। আইনকে আমরা কোনদিকে নিয়ে যাব সেটা সমাজের ইচ্ছা। সমাজ কীভাবে করতে চায়। আপনারাও ঠিক করেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আজ যে বিচারে বসল, সেটা সঠিক কারণে হয়েছে কি না, সঠিকভাবে হয়েছে কি না। এটা আমার মুখের দিকে তাকানোর কোনো দরকার নেই। এটা আপনার মনে যা জাগে তাই করবেন।

নোবেল জয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা এগুলো স্কুলে পড়বে। তারা তো নোবেল পুরষ্কারের কথা ভুলতে পারবে না। তখন তারা পড়বে, তার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দেয়, মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ দেয়, জালিয়াতিতে দেয়; তখন তারা কনফিউশনে পড়ে যাবে। আসলটা কি! এটা কি মুখোশ নাকি আসল মানুষ। তারা একাই না কি, তাদের সাঙ্গপাঙ্গ আছে?