বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ খালেক শেখ-এর প্রয়াণবার্ষিকী আজ
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বিশিষ্ট সমাজহিতৈষী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অনুসারী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ খালেক শেখ-এর ২২তম প্রয়াণবার্ষিকী আজ রোববার (১০ মার্চ)।
পুলিশ বাহিনীর সাবেক সদস্য ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের এই কৃতি সন্তান বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের নির্দেশনার পরই এলাকার যুবকদের সংগঠিত করে মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন। তিনি তখন রাতে রাতে স্থানীয় গোহালা টি সি এ এল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আড়াই হাত বাঁশের লাঠি তৈরি করে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদেরকে ভারতে পাঠান। এভাবে তিনি এলাকার প্রায় ৬০ জন যুবককে ভারতে পাঠান। যারা ফিরে এসে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে! এর মধ্যে তাঁর আপন দুই ভাই ও এক ভাগ্নেও ছিলেন। এর মধ্যে এক ভাই ছিলেন মুজিব বাহিনীর সদস্য।
গোপালগঞ্জের এই কৃতি সন্তান, দেশপ্রেমিক, অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ খালেক শেখ মহান মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাস প্রতিটি মুহূর্ত পরিবারসহ মৃত্যুঝুঁকি মাথায় নিয়ে কাটান! তাঁদের বাড়িঘর একাধিকবার লুট করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পাকিস্তানি মিলিটারি শিরচ্ছেদের জন্য ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে তাঁর বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে! এলাকার হাটে-বাজারে ঢোল পিটিয়ে তাঁকে মৃত অথবা জীবিত অবস্থায় ধরিয়ে দিতে বলা হয়। তিনি দিগনগরসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি এলাকায় অসংখ্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান ও কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন। জনহিতৈষী, সমাজসেবক এম এ খালেক শেখ এলাকায় আজও সমানভাবে জনপ্রিয়। তিনি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত জনকল্যাণে কাজ করে গিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের এই বীর সেনানী ২০০২ সালের ১০ই মার্চ মঙ্গলবার লিভার সংক্রান্ত জটিলতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিচালনার কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক পরিচালক শিল্পী ও সংগঠক আশরাফুল আলম পপলু তাঁর তৃতীয় সন্তান। এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা ও গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের গোহালায় নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আজ মুনিরকান্দি আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা, পূর্বনওখন্ডা আলিয়া মাদ্রাসা, হেফজখানা ও এতিমখানায় কোরআন খতম ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। গ্রামের বাড়িতে সকাল থেকে কোরআন খতম এবং বাদ আছর মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকার বাসায় বাদ মাগরিব কোরআন খতম এবং দোয়ার আয়োজন করা হয়।