বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আবেদন

Looks like you've blocked notifications!
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি

বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে এ আবেদন করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী। 

এ বিষয়ে আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কারণ দেখিয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।  

ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, যেহেতু হাইকোর্ট বলেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিদেশ যেতে হলে আদালতকে জানিয়ে যেতে হবে, তাই ওনার পক্ষ থেকে আমরা বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালকে বিষয়টি অবগত করেছি, আবেদন করেছি। সম্ভবত আগামী ১৩ মার্চ বিদেশ যাবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালকে জানানো হয়েছে। 

ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন আরও জানান, আবেদনে বলা হয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যেতে চান। কিন্তু আদালত যেহেতু দেশের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে অবহিত করতে বলেছেন, তাই এ আবেদন করা হলো। 

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিদেশ যেতে অনুমতি লাগবে জানিয়ে আদেশ ও রুল জারি করেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের রিভিশন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। 

শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ টেলিকমের অপর তিন শীর্ষ কর্মকর্তা বিদেশ ভ্রমণে গেলে আদালতের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে বলে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। 

ড. ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তিন শীর্ষ কর্মকর্তার ছয় মাসের কারাদণ্ডের রায় স্থগিতের আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে এবং আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের সংশ্লিষ্ট আদালতের অনুমতি ছাড়া বিদেশে যেতে নিষেধাজ্ঞা দিতে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। 

এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদাত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। 

রিভিশন আবেদনের বিষয়ে অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধিতে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজা আপিল আদালত স্থগিত করতে পারে না। আপিল আদালত শুধু জরিমানার আদেশ স্থগিত করতে পারে।’ 

ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছিলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূসসহ চারজনকে হয়রানির জন্য রিভিশন পিটিশন করা হয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। বিভিন্ন সেমিনারে যোগ দিতে তিনি বিদেশে যাবেন, দেশের জন্য মর্যাদা বয়ে আনবেন। তাকে বিদেশ যেতে বাধা দিলে দেশের সম্মান ক্ষুণ্ণ হবে।’

শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গত বছরের ৬ জুন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের চার সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। 

২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) এস এম আরিফুজ্জামান। 

মামলার নথি অনুসারে, আইএফইডি কর্মকর্তারা ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট ঢাকার মিরপুরে গ্রামীণ টেলিকমের অফিস পরিদর্শন করে শ্রম আইনের বেশকিছু লঙ্ঘন খুঁজে পান। একই বছরের ১৯ আগস্ট গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির ৬৭ কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা ছিল, কিন্তু তা করা হয়নি। এ ছাড়া কর্মচারীদের পার্টিসিপেশন ও কল্যাণ তহবিল এখনো গঠন করা হয়নি এবং কোম্পানির যে লভ্যাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা ছিল তার পাঁচ শতাংশও পরিশোধ করা হয়নি।