বিএনপির আন্দোলন চলছে, চলবে : ড. মঈন খান

Looks like you've blocked notifications!
খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে মহানগর ও জেলা বিএনপির কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে ইফতার মাহফিলে বক্তব্য দিচ্ছেন ড. আব্দুল মঈন খান। ছবি : এনটিভি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘আমরা আন্দোলন করেছি, করছি এবং আন্দোলন করব।’

আজ বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে মহানগর ও জেলা বিএনপির কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে ইফতার মাহফিলে ড. আব্দুল মঈন খান এ কথা বলেন।

ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীরা কেউ হতাশ হয়নি, যদিও আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি, কিন্তু আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও স্বৈরাচার পতনের আন্দোলন পৃথিবীতে কখনও সহজ হয়নি।’

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ ইসলাম অমিত, জয়ন্ত কুণ্ডুসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

ড.মঈন খান আরও বলেন, ‘জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চলছে এবং ডামি সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত চলবে। যারা জোর করে ক্ষমতায় আছে, দেশের জনগণ এই ডামি সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। জনগণের সেবা নয়, ক্ষমতায় টিকে থাকা বর্তমান সরকারের একমাত্র লক্ষ্য। দেশে কোনো নির্বাচনি ব্যবস্থা নেই, সব ধ্বংস করে দিয়েছে। শুধু রাজনীতি নয়, সমাজের সবকিছু গ্রাস করছে এ সরকার। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ভীত তারা।’

 সাবেক এ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি না দিয়ে সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে, বেঅইনি কাজ করছে সরকার। কিন্তু বিএনপি আইন মোকাবিলা এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তির আন্দোলন করবে।’

সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে মন্তব্য করে ড. মঈন খান বলেন, ‘দেশে যখন একদলীয় সরকার কায়েম হয়, তখন পরিস্থিতি এখনকার মতোই হবে। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থাকে কুক্ষীগত করে রেখেছে সরকার। এই ডামি সরকার একটি দেশের কৃতদাসে পরিণত হয়েছে। গত ৭ জানুয়ারি দেশে একটি ডামি নির্বাচন হয়েছে। বিএনপির আহ্বানে সারা দিয়ে ৬২টি রাজনৈতিক দল জনগণের কাছে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়েছিল। জনগণ সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভোট বর্জন করেছে। আওয়ামী লীগের নেতারাই বলেছেন বিএনপির নেতাদের জেলে না রাখলে তারা নির্বাচনের মাঠে থাকতে পারত না। ৭ জানুয়ারি দেশের জনগণ একটাই ম্যাসেজ দিয়েছে, তারা ডামি সরকারের পক্ষে নেই। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।’

সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যার বিচার পায়নি তাদের পরিবার উল্লেখ করে ড. মঈন খান বলেন, সীমান্তে আমাদের নিরীহ জনগণকে হত্যা করছে কিন্তু ডামি সরকার তাদের প্রভুদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলছে না। সরকারের যারপরনাই হিংসাত্মক আক্রমণের শিকার বিএনপির লাখ লাখ পরিবার। খুন, গুম করা হয়েছে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে। কিন্তু বিএনপি এখনও নীরবে সবকিছু সহ্য করছে। বিএনপি হিংসাত্মক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বিএনপি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না- বিএনপি জনগণের কথা বলে।’

শান্তিপূর্ণভাবে সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. মঈন খান বলেন, ‘বিএনপি জনগণকে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে চায়। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন তত দিন চলবে, যত দিন না এই ডামি সরকার বিদায় নেবে।’

অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে যারা তাবেদার সরকারের হাতে খুন-গুমের শিকার হয়েছেন তাদের স্মরণ করা হয়। আলোচনা শেষে নিহতদের আত্মার শান্তি ও আহতদের এবং দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।

 এই সময় বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের পক্ষ হতে খুলনার বটিয়াঘাটা যুবদলনেতা বাগেরহাট জেলখানায় আটক অবস্থায় মারা যাওয়া মিজানের পরিবারের হাতে একটি ইজিবাইকের চাবি ও কাগজপত্র তুলে দেন ড. আব্দুল মঈন খান।

খুলনা বিএনপির এই ইফতার মাহফিলে স্থানীয় জামায়াতে ইসলামী ও নাগরিক ঐক্যের নেতারাও অংশ নেন।