আগুন ঝলসে দিল দিনমজুরের স্বপ্ন

Looks like you've blocked notifications!
কুষ্টিয়ার মানচিত্র

দিনমজুর আরমান আলীর (৪০) স্বপ্ন পুড়ে শেষ। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড কেড়ে নিল তার স্বাচ্ছন্দ্য। হঠাৎই ঝলসে গেল যেন তার ভাগ্যরেখা। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) দিনগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে লাগা আগুনে আরমানের দুটি গরু ও একটি ছাগল পুড়ে মারা যায়। আরও একটি গাভীর শরীরের প্রায় ৮০ ভাগ ঝলসে গেছে। এ ছাড়া ভস্মীভূত হয়েছে গোয়ালঘর।

কুমারখালীর পান্টি ইউনিয়নের জোতভালুকা গ্রামের ছেলে আরমান। বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে প্রায় তিন থেকে চার লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রমজানের কারণে তারাবির নামাজ পড়ে সবাই দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। রাত ১টার দিকে শব্দ ও আলোয় ঘুম ভেঙে যায় আরমানের। পরে তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দেখেন দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।

এরপর তারা কলস, হাড়ি, পাতিল, বালতি, বদনায় পানি ঢেলে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে আরমানের গোয়ালঘর, গোয়ালে থাকা দুটি গরু ও একটি ছাগল পুড়ে মারা গেছে। আরও একটি গাভীর শরীরের প্রায় ৮০ ভাগ ঝলসে গেছে।

সরেজমিনে এই প্রতিবেদক আজ শুক্রবার সকালে দেখতে পান, একটি গর্ভবতী গরুকে মশারির ভেতরে রাখা হয়েছে। গরুটির চোখ, মুখ ও কানসহ ৮০ ভাগ শরীর ঝলসে গেছে। গোয়ালঘর পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। পোড়া গোয়ালঘরের ভেতরে মরা একটি গরু ও একটি ছাগল রয়েছে। পাশেই পড়ে আছে আরও একটি মরা গরু। বাতাসে পোড়া গন্ধ ছড়িয়ে রয়েছে। আগুনে পোড়া বাড়িতে উৎসুক জনতা ভিড় করেছে। শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন দিনমজুর আরমান ও তার স্ত্রী নাছরিন খাতুন।

এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে মো. আরমান আলী বলেন, 'হঠাৎ ঘুম ভাঙলে দেখি আমার সব শেষ। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। তখন দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না। মাত্র দুই ঘণ্টার আগুনে আমার সম্পদ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গরু, ছাগল ও গোয়ালঘরসহ আমার প্রায় তিন থেকে চার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।'

প্রতিবেশী বিল্লাল শেখ জানান, তিনি রাত দেড়টার দিকে গিয়ে দেখেন আগুন। লোকজন কলস, বালতির পানি দিয়ে আগুন নেভাচ্ছেন। আনুমানিক রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে যোগাযোগ করা হলে তারা এই বিষয়ে কিছু না জানার কথা বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল হক বলেন, ‘আগুন লাগার খবর শুনেছেন তিনি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত করে পরে জানানো যাবে। লিখিত দরখাস্ত পেলে নিয়ম অনুযায়ী সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে।’