‘সেই বিস্ফোরণে যেন মাথার ছাদটাই উড়ে গেল’
আট বছরের দুটি ফুটফুটে শিশুর সাথে তোলা নাহিদ কাউসারের ছবিটিই এখন কেবলই স্মৃতি। আনন্দঘন মুহূর্তের এক টুকরা এই স্মৃতিই এখন বেদনায় পরিণত হয়েছে তার অকাল প্রস্থানে। সাভারে কাপড়ের দোকানে এসি বিস্ফোরণে দগ্ধ নাহিদ কাওসার (৪৫) দীর্ঘ ১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে হার মেনেছেন।
আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ভোরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
নাহিদ কাওসার সাভার পৌরসভার তালবাগ মহল্লার আব্দুর রহমানের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম। এই নিয়ে এ ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুজনে।
চিকিৎসকরা বলেছেন, নিহত কাওসার নাহিদ ছিলেন ব্যবসায়ী। ওই ঘটনায় তার দেহের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গিয়েছিল। স্ত্রী ও আট বছরের দুটি জমজ সন্তান রয়েছে তার।
সকালেই স্বামীর নিথর দেহের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন ফারজানা শারমিন অভি। চোখে মুখে ছিল অনিশ্চয়তার ছাপ। গত ১৫ দিনটি অভির জীবনে বিভীষিকাময় এক অভিজ্ঞতা।
এত অল্প বয়সে স্বামীকে হারিয়ে এখন তছনছ দুই সন্তানকে নিয়ে তার সুখের সংসার। আট বছরের জমজ সন্তান আয়ান ও আহসান কাকে বাবা বলে ডাকবে। আদরের সন্তান দুটির শৈশব শুরু হল পিতৃহারা যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে। অপলক নয়নে যেন দেখতে পাচ্ছিলেন অনিশ্চিত অনাগত দিনগুলোকে আর বিলাপ করছিলেন স্বামী হারানোর শোকে।
গত ১৫ এপ্রিল, সোমবার রাত ৯টার দিকে সাভারের গেন্ডা বাসস্ট্যান্ড এলাকার আদ্রিতা ফেব্রিক্স অ্যান্ড টেইলার্স নামের একটি দোকানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন দগ্ধসহ আহত হন আরও ৫ জন।
গুরুতর দগ্ধ তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে ভর্তি করা হলে পরদিন মারা যান টেইলার্স মাস্টার আমজাদ হোসেন। এ ঘটনায় দোকান মালিক ইউসুফ হোসেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে সংকটাপন্ন অবস্থায় এখনো চিকিৎসাধীন।
ওই ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত করে ফায়ার সার্ভিস জানায়, এসির পাইপ লিকেজ থেকেই বিস্ফোরণের সূত্রপাত ঘটে।