৬৬ শতাংশ চালক চোখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন
যানবাহনের প্রায় ৬৬ শতাংশ চালক চোখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর। সম্প্রতি মিশনের আয়োজনে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২৩’ এবং ‘ওয়ার্ল্ড ডে অব রিমেম্বারেন্স ফর রোড ট্রাফিক ভিক্টিমস-২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ক্যাম্পেইনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন জানায়, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ৮২৪ জন চালকের মধ্যে মোট ৫৪১ জন চালক চক্ষু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এতে দেখা যায়, প্রায় ৬৬ শতাংশ চালক চোখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। ৫৪১ জন চালকের মধ্যে প্রায় ৭৩ শতাংশ চালকের দৃষ্টিশক্তিজনিত সমস্যা পাওয়া গেছে, যাদের চশমা ব্যবহার প্রয়োজন।
এছাড়া ৪ শতাংশ চালকের ছানি সমস্যা এবং ২৩ শতাংশের চোখের অন্যান্য সমস্যা যেমন- শুষ্ক চোখ, অ্যালার্জির সমস্যা ইত্যাদি পাওয়া গেছে। ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত ২৬ শতাংশ এবং ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত ২৩ শতাংশ চালকের চোখের সমস্যা পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, ৮২৪ জন চালকের মধ্যে ৪০০ জন চালকের রক্তে শর্করা সীমার উপরে, যা শতকরা ৪৯ শতাংশ। ২৫৮ জন চালক উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, যা শতকরা ৩১ শতাংশ এবং ১৩৭ জন চালক উচ্চ রক্তে শর্করা এবং উচ্চ রক্তচাপ উভয় সমস্যায় ভুগছেন, যা শতকরা ১৭ শতাংশ। এছাড়া ৬০ শতাংশের বেশি চালক গাড়ি চালানোর জন্য শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ নন বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ক্যাম্পেইনে সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষায় রক্তচাপের মাত্রা, রক্তে শর্করার মাত্রা, উচ্চতা অনুযায়ী ওজন এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরামর্শ অন্তর্ভুক্ত ছিল। একই ভাবে, চোখের পরীক্ষায় দৃষ্টিশক্তির কাছাকাছি এবং দূরবর্তী সীমা, চালকদের ছানি পরীক্ষা এবং সে অনুযায়ী পরামর্শ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের যৌথ উদ্যোগে গত বছরের ১১ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত এ স্বাস্থ্য ও চক্ষু পরীক্ষা কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়।
রাজধানীর নিকুঞ্জ এবং উত্তরা বিআরটিএ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গাবতলী বাস টার্মিনাল, মহাখালী বাস টার্মিনাল, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, তেজগাঁও ট্রাক টার্মিনাল এবং কুমিল্লা জিলা শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে স্বাস্থ্য ক্যাম্প পরিচালিত হয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ তে মোটরযানকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যেখানে সড়ক ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার বিষয়টি নেই বললেই চলে। সড়ক ব্যবহারকারীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ করে মোটরযান পরিচালনায় নিযুক্ত তথা গাড়ি চালকদের শারীরিক সুস্থ্যতা, নিরাপদ সড়ক সংক্রান্ত প্রশিক্ষণসহ জাতিসংঘে সেইফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচের আলোকে একটি ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।