সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা ও ইজারাদারকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সরকারি রাস্তা ও মুকন্দগাঁতী আঞ্চলিক সড়ক থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ডের নামে যেকোনো ধরনের টোল আদায় বন্ধে তাদের এই শোকজ নোটিশ দেন আদালত।

আগামী ১০ দিনের মধ্যে পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা ও ইজারাদার সাইফুল ইসলামকে এই শোকজ নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মামলার বাদী সোহেল রানা টোল আদায় বন্ধে আজ বেলকুচি উপজেলা সহকারী জজ আদালতে অন্তবর্তীকালীন স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক নাদিরা সুলতানা বেলকুচি পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা ও ইজারাদার সাইফুল ইসলামকে এই শোকজ নোটিশ দেন।

বেলকুচি উপজেলা সহকারী জজ আদালতের পেশকার সাদিকুল ইসলাম ও বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাখাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মামলা বাদী সোহেল রানার ভাইয়ের কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়ার মাধ্যমে যাত্রী বহর করে আসছে। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী যেখানে সিএনজি অটোরিকশা গ্যারেজ করা বা থামানো জন্য নির্ধারিত স্ট্যান্ড বা জায়গা নেই সরকারি রাস্তার উপর দিয়ে চলাচল করে বা যাত্রী উঠানামা করায়; সেই এলাকায় চেয়ারম্যান বা মেয়র কোনো স্ট্যান্ডের নাম করে ইজারা বন্দোবস্ত ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে টোল আদাল করতে পারবে না।

বেলকুচি পৌরসভার মুকুন্দগাতী গ্রামের মধ্য দিয়ে দিয়ে সয়দাবাদ-এনায়েতপুর রাস্তা গেছে। এই মুকুন্দগাতীতে সিএনজি, বাস, ট্রাক স্ট্যান্ড বা গ্যারেজ করার জন্য কোনো স্থায়ী জায়গা নেই। কিন্তু বেলকুচি পৌর মেয়র পৌরসভার নিয়ন্ত্রণাধীন মুকুন্দগাতী এলাকাকে সিএনজি, বাস, ট্রাক, স্ট্যান্ড দেখিয়ে বার্ষিক ইজারা দেওয়ার জন্য গত ৮ ফেব্রুয়ারি দরপত্র আহ্বান করেন। দরপত্রের সর্বোচ্চ দরদাতা মুকন্দগাতী মহল্লার ফকির চানের ছেলে সাইফুল ইসলাম মনোনীত হন।

পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজার যোগসাজসে টোল আদায়কারী ইজারাদার সাইফুল ইসলাম সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিকদের নিকট থেকে টোল আদায়ের জন্য নানা ধরনের ভয়ভীতি এবং চাপ প্রয়োগ করছেন। গত ২০ এপ্রিল টোল আদায়কারী সাইফুল ইসলাম এলাকার মাস্তান বাহিনী দিয়ে সব সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে টোল আদায়ের চেষ্টা করে এবং কিছু কিছু মালিকের কাছ থেকে টোল আদায় করে রশিদ দেন। বাদী টোল না দিলে তাঁর অটোরিকশা আটকিয়ে রাখার ভয়ভীতি দেখান। এতে বাদীসহ অন্যান্য অটোরিকশার মালিকদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

এ কারণে পৌর মেয়র ও টোল আদায়কারী বেলকুচি পৌর এলাকার কোনো স্থান থেকে বা মুকন্দগাতী স্ট্যান্ডের নাম করে অটোরিকশার মালিক ও চালকের কাছ থেকে কোনো ধরনের টোল আদায় করতে না পারে, সেই মর্মে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক পৌর মেয়র ও ইজারাদারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

এর আগে সরকারি রাস্তায় দাঁড়ানো সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে টোল আদায় বন্ধে গত ২২ ফেব্রুয়ারি পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজাকে উকিল নোটিশ পাঠান সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের চর শইলাবাড়ি গ্রামের মুজাম্মেল হকের ছেলে সোহেল রানা। এরপর গত ২৪ এপ্রিল পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা ও টোল আদায়কারী সাইফুল ইসলামকে বিবাদী করে আদালতে মামলা করা হয়।