উন্নয়ন চাইলে সংস্কারের বাজেট করতে হবে : ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, উন্নয়ন করার জন্য এখন বাংলাদেশে সংস্কারটা হলো সবচেয়ে জরুরি। যদি উন্নয়ন চান তাহলে সংস্কারের বাজেট করতে হবে। উন্নয়নমুখী বাজেট হতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এনটিভির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘কেমন বাজেট চাই’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, সংস্কার কোন জায়গায় হবে? আমি দুটো জায়গা আপনাকে বলি। শ্রদ্ধেয় মশিউর রহমানের কথার উপরে আমি বলছি, উনি বলেছেন ভর্তুকির কথা। এখন কথা হলো ভর্তুকি কোথায় দেবেন? টাকা আসবে কোথা থেকে? জ্বালানি খাত এখন বাংলাদেশে সবচেয়ে সমস্যার বিষয় হিসেবে দাঁড়িয়েছে। ২৭ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ ক্যাপাসিটি আমরা ১২-১৩ হাজারের বেশি ব্যবহার করতে পারি না এবং লোডশেডিং হচ্ছে। কারণ আমাদের তেল আনার পয়সা নেই। আপনি যদি বলেন, এখানে ভর্তুকি কমাতে বলেছে আইএমএফ। আপনি ভর্তুকি কোথায় কমাবেন? ৩৯ হাজার ও সাড়ে ৩৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি আছে। ৩২ হাজার কোটি টাকা হলো ক্যাপাসিটি চার্জ। আপনি ক্যাপাসিটি চার্জ ধরবেন না আর অন্য জায়গায় ভর্তুকি কমাবেন, এটা কীরকম সামাজিক অন্যায় আমাকে বলেন। ভর্তুকি কমানোর জায়গা নেই আপনি সামঞ্জস্যকরণ করবেন।
সিপিডির এই ফেলো আরও বলেন, আমি অন্য উদাহরণ দেই, আপনি সংস্কার করবেন। একীভূত করবেন, দুই ব্যাংকের সাথে আরেক ব্যাংক। একীভূত হচ্ছে ব্যাংক। রাতেরবেলা মালিকানা বদল হয়ে গেছে। এটা কী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়-দায়িত্ব ও নজরদারি করার কথা? এটাই কী প্রটেনশিয়াল গাইডলাইন্স। যতক্ষণ না পর্যন্ত ব্যাংকিং খাত ও জ্বালানি খাতে সংস্কার না হবে, বাংলাদেশের এসডিসি বাস্তবায়নে ও এলডিসি থেকে বের হওয়া এবং উচ্চমধ্যম আয়ের দেশগুলোকে উনারা বিপদ সংকুল করে ফেলবেন। যদি আপনি বাংলাদেশকে সামনে নিতে চান ব্যাংকিং খাতকে ঠিক করেন। জ্বালানি খাত ঠিক করেন। বাংলাদেশের আগামীর উন্নয়নে এই দুটো ফুসফুসের মতো কাজ করবে।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, আমি আরেকটি কথা বলি, আপনারা বলেন রেমিটেন্সের ৫% করতে হবে। কী অদ্ভুত কথা। সবাই জানে বহুবিধ বিনিয়ম হার কোন সময় অর্থনীতির জন্য ভালো না। সব সময় অদক্ষতার জন্ম দেয়। আমরা আইএমএফ’র কাছে স্বীকার করেছি সবগুলো খুলে আমরা একত্রিত করতে যাচ্ছি। এরকম দাবি আপনারা কেন করবেন? আজকে বড় একটা মিটিং হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। আমি হেডলাইন পড়লাম ১৪ শতাংশের বেশি সুদের হার হবে না। কিছুদিন আগে আপনারা বললেন সুদের হার বাজারের উপরে ছাড়বেন আর এখন বলবেন ১৪ শতাংশ করবেন। এটা বলার মতো কী এখন উনার এই প্রাধিকার আছে ?
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও অর্থপ্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানসহ সরকারের একাধিক নীতিনির্ধারক। অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ছাড়াও প্যানেল আলোচক ছিলেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জায়েদি সাত্তার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম।