জামালপুরে গবা খাল পরিচ্ছন্ন অভিযান সংসদ সদস্যের
জামালপুর শহরের পানি নিষ্কাশনের জন্য ৬৫ বছর আগে খনন করা গবা খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন অভিযান শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার (৩১ মে) সকালে এই খালের পাঁচটি পয়েন্টে প্রাথমিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন অভিযান শুরু হয়।
এই পরিচ্ছন্ন অভিযানে নেতৃত্ব দেন জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, পৌর মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনসহ জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান ও পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান।
এক সময় শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি এই খালের পানি ব্যবহার করে কৃষিকাজ এবং খাল থেকে মৎস্য আহরণ করা হতো। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার বা পরিষ্কার না করায় খালের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় শহরে। খালটিকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে এই পরিচ্ছন্ন অভিযান।
জামালপুর পৌরসভা ও সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই গবা খাল। পৌর শহরের শেখেরভিটা এলাকা থেকে খালটি শহরের মনিরাজপুর, ছুটগড় হয়ে কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি, দামেশ্বর হয়ে ঝিনাই নদীতে গিয়ে শেষ হয়েছে। ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৩০ ফুট প্রস্থের এই খালটির প্রবাহ ঠিক রেখে শহরের পানি নিষ্কাশন ও বর্ষকালে জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পরিচ্ছন্ন অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেন জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ। এরপর থেকেই জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস, পৌরসভাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। ‘গ্রিন জামালপুর, ক্লিন জামালপুর’-এর অংশ হিসেবে শহরের শেখেরভিটা এলাকায় খালের উৎসমুখে পরিষ্কারকরণ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ।
এ সময় জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান, পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তিন শতাধিক সদস্য অংশ নেন। পরিচ্ছন্নতা ও সংস্কারের মাধ্যমে গবা খালের প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা হলে শহরের পানি নিষ্কাশন ও বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব হবে।
সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘নানা ধরনের বর্জ্যের কারণে গবা খালটির প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য খালটিই চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা আজ এটা শুরু করলাম, তবে একদিনেই পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। প্রশাসন, পৌরসভা, রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় জনসাধারণ সবাইকে নিয়ে সবার সহযোগিতায় কাজটি করতে হবে। খালের আশপাশে যারা বসবাস করে তাদের সচেতন হতে হবে। ডাস্টবিনের পরিবর্তে খালের ভেতর সরাসরি বর্জ্য ফেলা হলে খালটি আবার বন্ধ হয়ে যাবে। আমার শহর আমার পরিষ্কার রাখতে হবে—এই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।’
পৌর মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, জামালপুর পৌর এলাকার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত গবা খালের পাঁচ কিলোমিটার অংশ পৌর কর্তৃপক্ষ ও কেন্দুয়া ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বাকি সাত কিলোমিটার অংশটুকু পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিষ্কার করবে। এই খালটি আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চলছে, আশা করি শহরের জলাবদ্ধতা অনেকটাই নিরসন হবে।