সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কে পাহাড়ি ঢলের পানি, সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন
পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলার দুর্গাপুর ও শক্তিয়ারখলায় মূল সড়কে পানি উঠে গেছে। এতেজেলা শহরের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছে তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভপুর উপজেলার মানুষ।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার সব নদ-নদী ও হাওরের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে আতংক বিরাজ করছে। সুরমা নদীর পানি ছাতক উপজেলা অংশে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিশ্বম্ভপুর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের তওফিক মিয়া( ৩৫) জানান, গত রাত থেকে শক্তিয়ারখলা সড়কে পানি উঠে গেছে। প্রতি বছর এই সড়ক পাহাড়ি ঢলে পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে মানুষের কষ্টের শেষ থেকে না। ১০ টাকার গাড়ি ভাড়া ৫০ টাকা লাগে।
বিশ্বম্ভপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের আহসান মিয়া (৬০) জানান, বাড়ির ভিটা সমান পানি চলে এসেছে। আজকে রাতে বৃষ্টি হলে বসত ঘরে পানি উঠে যাবে। প্রতি বছর বন্যায় ঘরে পানি উঠে যায়। হাতে কাজ থাকে না, ঘরে খাবার থাকে না, পরিবার সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে খুব বিপদে থাকি।
তবে সুনামগঞ্জ পৌরশহরের ষোলঘর পয়েন্ট দিয়ে সুরমা নদীর পানি এখন বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যমতে আগামী ৭২ ঘণ্টায় সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভপুর, ধর্মপাশা, ছাতক ও দোয়ারাবাজারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টিপাত না হলেও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে নদীর পানি হাওরে গিয়ে হাওরেও পানি বেড়েছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্প মেয়াদি বন্যা দেখা দিতে পারে। তবে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে পানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে। তবে এখন বর্ষা মৌসুম, তাই স্বাভাবিক ভাবেই নদী হাওরে পানি বাড়ছে। তবে সিলেটের মত বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ নেই, সিলেটে উজানের বন্যার পানি নামার জায়গা নেই। সুনামগঞ্জে হাওর থাকায় সেই পানি হাওরে প্রবেশ করছে। তাই যেহেতু হাওর এখনও পুরোপুরি ভরেনি তাই বড় ধরনের বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই।