বৃদ্ধা মাকে শ্বাসরোধে হত্যা মামলায় ছেলে-দেবরসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় হত্যা মামলায় একমাত্র ছেলে, দেবরসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার (৬ জুন) বিকেল ৪টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমিন এ রায় ঘোষণা করেন।
মিরপুর উপজেলার কাটদহচর এলাকায় সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে বিধবা বৃদ্ধা মমতাজ বেগম ওরফে জাগা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে মরদেহ গুমের অভিযোগে এ মামলা হয়।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন (১) উপজেলার কাটদহচর গ্রামের বাসিন্দা নিহত জাগা খাতুনের ছেলে মো. মুন্না বাবু (৩৫), দেবর মো. আব্দুল কাদের (৫৫) ও মুন্না বাবুর বন্ধু মো. রাব্বি আলামিন (৩২)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মমতাজ বেগম ওরফে জাগা খাতুন (৫৭) নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় একমাত্র ছেলে মুন্না বাবু মা নিখোঁজের চার দিন পর ২৫ জানুয়ারি মিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর প্রায় এক মাস পর ২৩ ফেব্রুয়ারি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সন্দেহ হলে ছেলে মুন্না বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর ঘটনার সঙ্গে ছেলে মুন্না বাবুসহ তাঁর চাচা আব্দুল কাদের ও বন্ধু রাব্বি আলামিনকে জড়িত সন্দেহে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের মোটিভ উদ্ঘাটিত হয় এবং আটক আসামিরা স্বীকারোক্তি দেন। তাঁরা জানান, বিধবা জাগা খাতুনের কয়েক কোটি টাকার জমি ও পোড়াদহের কাপড়ের হাটের সাত-আটটি দোকান হাতিয়ে নিতে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ পুকুরপড়ে পুতে রাখা হয়েছে। এরপর ওই দিন বিকেলে মিরপুর থানা পুলিশ নিহত বৃদ্ধার বস্তাবান্দি গলিত মরদেহ উদ্ধার করে এবং জেলা সদর হাসপতাল মর্গে পাঠায়। এরপর নিহত বৃদ্ধার ভাই তোরাব আলী বাদী হয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে মিরপুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল মিরপুর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. কায়েশ মিয়া তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট দেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার লোভে বিধবা বৃদ্ধা মাকে হত্যা মামলায় মুন্না বাবু, আব্দুল কাদের ও রাব্বী আলামিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।