টাঙ্গাইলের বাসাইলে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মসজিদে মাইকিং করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মনোয়ারা বেগম (৫০) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। আজ বুধবার (১২ জুন) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কাশিল ইউনিয়নের স্থলবল্লা গ্রামের উত্তরপাড়া ও দক্ষিণপাড়ার লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ অবস্থান করছে।

নিহত মনোয়ারা বেগম স্থলবল্লা উত্তরপাড়ার শওকত মিয়ার স্ত্রী। আহতদের মধ্যে উত্তরপাড়ার ১০ জন ও দক্ষিণপাড়ার পাঁচজনকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উত্তরপাড়ার মিনহাজ উদ্দিন (৩৭) ও বিল্লাল (৫৫) নামে দুজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, স্থলবল্লা উত্তরপাড়ার শুকুর, জালাল, কালাম ও বিল্লালের সঙ্গে একই গ্রামের দক্ষিণপাড়ার আনু, সেলিম, শফি, এনামুল হক ও রাসেলদের জমি-জমা নিয়ে প্রায় ২০ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে। সেই বিরোধের জের ধরে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গরুর হাট থেকে ফেরার সময় উত্তরপাড়ার জহিরুল, আয়নাল, আলাল, মজিবর ও ঠাণ্ডুর পথরোধ করে দক্ষিণপাড়ার এনামুল হক, আনু, রাসেল, বাদল, সেলিম সানাউল্যা, সানুসহ কয়েকজন। এ সময় এনামুল হকসহ তাঁরা কয়েকজন উত্তরপাড়ার জহিরুলকে মারধর করেন। পরে আজ সকালে মসজিদে মাইকিং করে দা, ফালা, টেঁটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উত্তরপাড়ার আনোয়ারের বাড়িতে হামলা চালায় দক্ষিণপাড়ার লোকজন। এ সময় উত্তরপাড়ার লোকজন প্রতিহত করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে মাথায় দেশীর অস্ত্রের আঘাতে মনোয়ারা বেগমের মৃত্যু হয় এবং অন্তত ২০ জন আহত হয়।

ঘটনার পর পরই পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত নারীর ছোট ভাই হেলাল উদ্দিন জানান, গতকাল বিকেলে উত্তরপাড়ার জহিরুল, আয়নাল, আলাল, মজিবর ও ঠান্ডু গরুর হাট থেকে ফেলার সময় দক্ষিণপাড়ার এনামুল হক, আনু, রাসেল, বাদল, সেলিম, সানাউল্যা, সানুসহ কয়েকজনে মিলে তাদের পথরোধ করে। এ সময় কয়েকজনকে মারধর করা হয়। পরে আজ সকালে আবার দক্ষিণপাড়ার লোকজনই মসজিদে মাইকিং করে উত্তরপাড়ায় হামলা চালায়। তাঁর বোন ঝগড়া ফেরাতে গিয়েছিলেন। এ সময় মাথায় ফালার আঘাতে তাঁর বোন মনোয়ারা গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। তিনি নিজেও মাথায় আঘাত পেয়েছেন। এ সময় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। তিনি তাঁর বোন হত্যার বিচার চান।

বাসাইল থানার এসআই মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নিহত নারীর মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে আছি। এ ঘটনায় দুই পক্ষের একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে।’

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতিক বলেন, ‘হাসপাতালে একজনের মরদেহ রয়েছে। আহত অবস্থায় কয়েকজনকে আনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’