রাজধানীর ২০ হাটে আজ থেকে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশে জমতে শুরু করেছে কোরবানির পশুরহাট। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) থেকে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় স্থায়ী দুটিসহ মোট ২০ পশুরহাটে আনুষ্ঠানিকভাবে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। পশুর হাটগুলোতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কোরবানির পশু নিয়ে আসছেন খামারিরা।
দুই সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় গাবতলীর স্থায়ী হাটসহ ৯টি হাট এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় সারুলিয়া স্থায়ী পশুর হাটসহ ১১টি হাট বসেছে। তবে, এ বছর আদালতের নির্দেশনার কারণে আফতাবনগরে হাট বসবে না।
উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ বিভাগের তথ্য কর্মকর্তা পিয়াল হাসান বলেন, রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবে স্থায়ী একটি ও অস্থায়ী আটটি হাট বসবে। এবার আজ থেকে ঈদের দিন সোমবার সকাল পর্যন্ত পাঁচ দিন হাট বসবে। কোরবানির পশু কেনাবেচা নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে যাতে করা যায়, সেজন্য ঢাকা উত্তরের হাটগুলোতে সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে।
বাজারে ক্রেতারা কোনো নগদ অর্থ না নিয়ে এসেও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পশু ক্রয় করতে পারবে জানিয়ে পিয়াল হাসান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ইনস্ট্যান্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে যে কেউ টাকার লেনদেন করতে পারবে। এজন্য হাট এলাকায় অসংখ্য ব্যাংক বুথ থাকবে।
এ ছাড়া হাটে আসা মুসলিম ক্রেতাদের ওজু ও নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাটের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবার হাট ইজারাদারদের সতর্ক করা হয়েছে। কোনো বিক্রেতা যদি রাস্তায় হাট বসায়, তবে ইজাদারের জামানতের অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হবে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে বলেও জানান জনসংযোগ কর্মকর্তা।
ঢাকা উত্তরে অস্থায়ী আটটি হাটের মধ্যে রয়েছে—উত্তরা দিয়াবাড়ীর ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টরের পাশের খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের খালি জায়গা, মস্তুল চেকপোস্ট এলাকা, মিরপুর-৬ নম্বর সেকশনের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, ভাটারার সুতিভোলা খালের কাছের খোলা জায়গা, মোহাম্মদপুরের বছিলায় ৪০ ফুট সড়কের পাশের খালি জায়গা, ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদরাসা থেকে রানাভোলা স্লুইচগেট পর্যন্ত খালি জায়গা ও দক্ষিণখানের জামুন এলাকার খালি জায়গা।
এদিকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বলেন, সারুলিয়ায় স্থায়ী হাটসহ ডিএসসিসি এলাকার ১১ স্থানে পশুর হাট বসেছে।
মো. আবু নাছের জানান, প্রত্যেকটি হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য একটি করে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি কমিটিতে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। এ ছাড়া ডিএসসিসির নির্ধারিত গাইডলাইনের বাইরে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবেন। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের পাশাপাশি প্রত্যেকটি হাটে একটি করে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থাকবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে নগদ অর্থের লেনদেন ছাড়া ইনস্ট্যান্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ক্রেতা-বিক্রেতারা অর্থের লেনদেন করতে পারবেন। এজন্য পর্যাপ্ত ব্যাংক বুথের ব্যবস্থা থাকবে।
ঢাকা দক্ষিণে অস্থায়ী ১০টি হাটের মধ্যে রয়েছে—খিলগাঁও রেলগেট মৈত্রী সংঘ ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, পোস্তগোলা শ্মশান ঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, বনশ্রীর মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গা, কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা ও লালবাগে রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা।
এদিকে কোরবানির পশুর বর্জ্য ও অস্থায়ী পশুর হাটের বর্জ্য দ্রুততম সময়ে সরিয়ে নিতে দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা এবং হাটের ইজারাদারদের সঙ্গে মঙ্গলবার সভা করেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। ইজারাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।