অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ, চিকিৎসকের শাস্তি দাবি
চিকিৎসকের অবহেলায় সামীম ইয়াসার আফফানের নামে এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগে বিক্ষোভ করেছিল কিশোরগঞ্জের বিক্ষুদ্ধরা। পরে মানববন্ধনও করে তারা। প্রশাসনকে দেয় স্মারকলিপি। আর এবার চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণসহ ছয় দফা দাবিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে সংবাদ সম্মেলন। যদিও বরাবরের মতো অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক। আর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. সাইফুল ইসলাম বলেছেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত কার হয়েছে। তদন্ত করে দেখছি। অবহেলা প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ শনিবার (২২ জুন) সকাল ১১ টায় ‘শোকার্ত পরিবার ও বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী’ ব্যানারে দেওয়ানী আদালত ভবনের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে আফফানের বাবা নেত্রকোনায় বিএডিসির সহকারী পরিচালক কৃষিবিদ সারোয়ার এ জাহান (উপল)। তিনি জানান, গত ২৬ এপ্রিল কিশোরগঞ্জের মেডিল্যাব হেলথ সেন্টারে তার চার বছর সাত মাস বয়সী শিশুপুত্র আফফানের টনসিলজনিত সমস্যার কারণে অস্ত্রোপাচার হয়। অস্ত্রোপাচার পরবর্তী জটিলতা দেখা দিলে ঢাকার একটি হাসপাতালে ২১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৭ মে মারা যায় আফফান।
কৃষিবিদ সারোয়ার এ জাহানের অভিযোগ, নাক, কান গলা বিশেষজ্ঞ ডা. মুহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম সুমন ও অ্যানেসথেশিয়ার ডা. মো. আবু তাহের মিঞাঁর অবহেলা ও অদক্ষতাসহ ভুল চিকিৎসার কারণেই আফফানের অকাল মৃত্যু হয়। এটা হত্যার শামিল। তাই চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন বাতিলসহ কঠোর তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে তিনি ছয় দফা দাবি জানান। দাবির মধ্যে আছে—চিকিৎসকদের ডিগ্রির সত্যতা যাচাই, অপারেশন থিয়েটার ও সার্জারি করার সরঞ্জামাদির উপযুক্ততা যাচাই, রোগীকে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও অতিরিক্ত ওষুধ প্রদান বন্ধ করা এবং চিকিৎসকের ফি গ্রহণযোগ্যভাবে নির্ধারণ করা।
সংবাদ সম্মেলনে আফফানের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন ইদু, অ্যাডভোকেট মায়া ভৌমিক, নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি শেখ সেলিম কবীর ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট রুপক রঞ্জন রায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. মুহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, টনসিল ও অ্যাডিনয়েড রোগের লক্ষণই সর্দি-কাশি। আর টেস্টের রিপোর্টে নিউমোনিয়া ছিল না। নিউমোনিয়া থাকলে আমরা অপারেশন করতাম না।
একই কথা বলেছেন অ্যানেসথেশিয়ার ডা. আবু তাহের মিঞা। তিনি বলেন, আমরা যে রিপোর্ট দেখেছি সেখানে নিউমোনিয়ার কোনো লক্ষণ ছিল না।