এলডিসি-পরবর্তী বাংলাদেশের প্রস্তুতি দেখে উৎসাহিত এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্ট
স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে উত্তরণের পরবর্তী সময়ের জন্য বাংলাদেশের অগ্রিম প্রস্তুতি দেখে উৎসাহিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট ইংমিং ইয়াং। তিনি বলেছেন, ‘এর মধ্যে অর্থায়ন ও বাজার নিয়ন্ত্রণের মতো চ্যালেঞ্জগুলোও রয়েছে। এর মধ্যে আগামী পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার রূপরেখাও থাকবে।’ বাংলাদেশ সফর শেষ করার আগে আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ইউএনবিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ইংমিং ইয়াং এসব কথা বলেন।
এডিবির মধ্য ও পশ্চিম এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ইংমিং ইয়াং বলেন, ‘ইতোমধ্যে মধ্যমেয়াদি অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অর্থপূর্ণ সংস্কারের জন্য আমি বাংলাদেশে জোরালো প্রচেষ্টা লক্ষ্য করেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করতে সরকারের আন্তরিকতা প্রশংসনীয়। এটি দেশটির সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক ঝুঁকি কমাতে সহযোগিতা করবে। রাজস্বভিত্তিক আর্থিক একত্রীকরণ, মানসম্পন্ন অবকাঠামো ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, বাণিজ্য বহুমুখীকরণ, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা হ্রাসসহ নন-পারফর্মিং ঋণের পরিমাণ কমানো, বিনিয়োগের পরিবেশ বাড়ানো এবং সুশাসন জোরদার করার বিষয়ে ব্যাপকভাবে আলোচনা ও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’
বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে এডিবি বাংলাদেশের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে এসব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সরকারকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন ইংমিং ইয়াং।
এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ব্যাংকের সুদ ও বিনিময় হার উদার করার লক্ষ্যে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাহসী সংস্কার করেছে। এরপর ২০২৪ থেকে ২৫ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আহরণ এবং ব্যয় অগ্রাধিকারের মাধ্যমে একটি বিচক্ষণ রাজস্ব ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইয়াং বলেন, ‘চ্যালেঞ্জিং বাহ্যিক পরিবেশ বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও জিডিপি প্রবৃদ্ধির গড় হার ছয় দশমিক ছয় শতাংশসহ (২০২১ থেকে ২০২৩) অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ইতিবাচক লক্ষণ দেখিয়েছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের মাথাপিছু জিডিপি দুই হাজার ৬৪৩ ডলারে পৌঁছেছে। তবে কাঠামোগত সংস্কারে কিছু অগ্রগতি হলেও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা এবং আন্তর্জাতিক পণ্য ও খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস অব্যাহত রয়েছে।’
ইয়াং বলেন, সম্প্রতি, রিজার্ভ পরিস্থিতিতে লাগাম টানতে এবং বাহ্যিক স্থিতিস্থাপকতা পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংক আপৎকালীন পদক্ষেপ হিসেবে ক্রলিং পেগ নীতির মতো সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। এ ছাড়া অব্যাহত উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার উদারীকরণের পর মুদ্রানীতি আরও কঠোর করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈদেশিক মুদ্রা ও মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়লে মুদ্রানীতি আরও কঠোর করতে প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আরও বেশি রাজস্ব সংগ্রহের মাধ্যমে এই প্রচেষ্টা সফল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
গত নভেম্বরে তিন বছরের জন্য নিয়োগ পাওয়া ইয়াং বলেন, আইএমএফ কর্মসূচির আওতায় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের মাধ্যমে সামষ্টিক অর্থনীতির চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি সত্ত্বেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছয় দশমিক ছয় শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি সাত শতাংশে নামিয়ে আনা হবে বলে আশা করছে সরকার।
জলবায়ু সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে পরিবেশমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলেও জানান এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট। ইয়াং বলেন, ‘বাণিজ্য ঘাটতি সংকুচিত হওয়া এবং রেমিট্যান্সের প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে চলতি অর্থবছরে উদ্বৃত্ত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।’ দেশের মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে—নিম্ন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, স্বল্প রাজস্ব আহরণ, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের অপ্রতুলতা ও উচ্চ নন-পারফরমিং ঋণের সঙ্গে ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা। সরকার ভবিষ্যতের দুর্বলতা হ্রাস করতে সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি জোরদার এবং কাঠামোগত সংস্কার ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছে।
এলডিসি-পরবর্তী উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ
ইয়াং বলেন, ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আরও জটিল চ্যালেঞ্জ দেখা দেয়। তাই এডিবির নতুন অপারেটিং মডেলের আওতায় বাংলাদেশকে আরও রূপান্তরমূলক সহায়তা দেওয়া হবে। এ অঞ্চলের জলবায়ু ব্যাংক হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাহসী পদক্ষেপে আর্থিক ও অন্যান্য সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে এডিবি। আমরা উপযোগী জ্ঞান ও পরামর্শের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের ওপর আরও বেশি মনোনিবেশ করব।’ তিনি বলেন, মূলধন কাঠামো হালনাগাদ করার পর এডিবির আসন্ন নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় (দেশগুলোর প্রতি) অর্থায়ন বাড়াবে।
‘প্রধান খাতগুলোতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে জোরালো সহায়তা প্রদানে এডিবি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রেল, নদী পুনরুদ্ধার, পানি ব্যবস্থাপনা ও সঞ্চালন লাইনের মতো জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামোতে সহায়তা করা হবে। পাশাপাশি, মানব ও সামাজিক উন্নয়নে পরবর্তী প্রজন্মের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৃষিতে উচ্চশিক্ষা, স্বাস্থ্য, দক্ষতা উন্নয়ন এবং সামাজিক সুরক্ষায় সহায়তা করা হবে। এ ছাড়া ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন, রাজস্ব আহরণ, আর্থিক খাতের উন্নয়ন, স্থানীয় মুদ্রা, বন্ড ও সবুজায়নে সহায়তা করতে গৃহীত নীতিগুলোর সংস্কার করা হবে।’
জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা
এডিবি বাংলাদেশের সাহসী ও শক্তিশালী জলবায়ু পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানায়, যা ডেল্টা প্ল্যান, মুজিব সমৃদ্ধি পরিকল্পনা এবং জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায় প্রতিফলিত হয়েছে।
জলবায়ু এজেন্ডা বাস্তবায়নে সরকারের গৃহীত সার্বিক উদ্যোগ, বিশেষ করে বাংলাদেশ ক্লাইমেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপের (বিসিডিপি) প্রশংসা করেছে এডিবি।
এ বিষয়ে ইয়াং বলেন, ‘এটি সরকারের জলবায়ু পরিকল্পনাকে বিনিয়োগ প্রকল্পে রূপান্তর করবে; এর ফলে সরকারি ও বেসরকারি খাত থেকে অর্থায়নের মাধ্যমে নীতিগত ঘাটতি দূর, জ্ঞান বৃদ্ধি ও সক্ষমতা জোরদার করবে। বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সমন্বয় করে এডিবি নদী পুনরুদ্ধার ও ব্যবস্থাপনা কর্মসূচিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে আগ্রহী।’
বাংলাদেশের জন্য ২০২৪ সালের রেয়াতি ঋণের (সিওএল) পরিমাণ ৩৭ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে এক হাজার পাঁচ দশমিক ২০ মিলিয়ন ডলার করবে এডিবি, যাতে জলবায়ু পরিবর্তন ও সামাজিক প্রকল্পে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ব্যবসায়িক জলবায়ু এবং লজিস্টিক উন্নয়ন
ইয়াং বলেছেন, কিছু রপ্তানি পণ্যের জন্য বাংলাদেশের লজিস্টিক ব্যয় ৪৮ শতাংশের মতো হতে পারে, যা প্রতিবেশী ও প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজ করা এবং লজিস্টিক ব্যয় হ্রাসের লক্ষ্যে সমন্বিত স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার রপ্তানি আয় বাড়াতে পারে।’
গত এপ্রিলে সরকারের জাতীয় লজিস্টিক নীতি-২০২৪ অনুমোদনের প্রশংসা করে ইয়াং বলেন, ‘এটি উচ্চ লজিস্টিক ব্যয় কমিয়ে সমন্বিত সামগ্রিক সরকারি পদ্ধতির পথ প্রশস্ত করবে, যা এলডিসি-পরবর্তী যুগে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা বজায় রাখার চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করবে। এলডিসি-পরবর্তী নীতি-নির্ভর ঋণের আওতায় সরকারের লজিস্টিক সংস্কার কর্মসূচিতে সহায়তা দিচ্ছে এডিবি, যা আগামী বছর বাস্তবায়ন হবে।’
দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা
আঞ্চলিক সহযোগিতায়, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া উপআঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতায় (সাসেক) বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রশংসা করেন ইয়াং। ইয়াং বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নত সড়ক, রেল, বিমান ও নৌ-যোগাযোগ এবং সাসেক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাণিজ্য উন্নয়নে এডিবি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের বাণিজ্য ব্যয় হ্রাস এবং আঞ্চলিক বাজারে বৃহত্তর প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে আমরা সহায়তা করব।
ইয়াংয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, সাসেক, বিবিআইএন ও বিমসটেকের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতায় এডিবি অব্যাহত সমর্থন দেবে এবং বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত ও নেপাল মোটরযান চুক্তি এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক জ্বালানি বাণিজ্যে আরও অগ্রগতির জন্য সহযোগিতায় জোর দেবে সংস্থাটি।
সুষ্ঠু অর্থনৈতিক উন্নয়ন
২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উন্নীত হওয়ার পর কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়বে, যা বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশে সর্বনিম্ন। এ বিষয়ে ইয়াং বলেন, ‘এলডিসি-পরবর্তী যুগে যখন রেয়াতি সম্পদ ও বাজারে প্রবেশাধিকার সীমিত হয়ে যাবে, তখন সুষ্ঠু রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বজায় রাখার চাবিকাঠিই হচ্ছে কর রাজস্ব বাড়ানো।’ নীতি ও প্রশাসন উভয় দিকের দুর্বলতা থেকেই রাজস্ব বৃদ্ধির মৌলিক বাধাগুলো সৃষ্টি হয়। হিসাব অনুযায়ী, নিবন্ধিত করদাতাদের মাত্র ৪৭ শতাংশ কর রিটার্ন দাখিল করেন, যেখানে দেশের তিন শতাংশেরও কম মানুষ আয়কর দেন।
ইয়াং বলেন, ‘আমি বুঝতে পারি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০২৩ সালের কর আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর ব্যয় যৌক্তিকীকরণ, কর ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ ও ডিজিটালাইজেশন এবং করের ভিত্তি সম্প্রসারণসহ শক্তিশালী নীতিগত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে। এলডিসি-পরবর্তী যুগে টিকে থাকার জন্য বৃহত্তর নীতিমালার অংশ হিসেবেই নতুন লজিস্টিক পলিসি পাস করেছে মন্ত্রিসভা।’
বাংলাদেশের কর প্রশাসনের আধুনিকায়ন এবং উন্নত অটোমেশন, ডিজিটাইজেশন ও ঝুঁকিভিত্তিক নিরীক্ষণের মাধ্যমে কার্যকর কর নীতি বাস্তবায়নে প্রযুক্তিগত সহায়তা, বাজেট সহায়তা ও খাত উন্নয়ন কর্মসূচিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে এডিবি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বেসরকারি খাতের উন্নয়ন
ইয়াং বলেন, ‘২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উন্নীত এবং ২০৩১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার যে আকাঙ্ক্ষা করছে বাংলাদেশ, তাতে প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে গতিশীল বেসরকারি খাত।
‘নতুন অপারেটিং মডেলের আওতায় এডিবি তার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সার্বভৌম, অসার্বভৌম ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের সমন্বয়কে উৎসাহিত করবে। এই সমন্বয়ের মধ্যে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন (নবায়নযোগ্য শক্তি), সবুজায়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা। এ প্রেক্ষাপটে রাজস্ব আহরণে সরকারকে বন্ড ইস্যুতে সহায়তা করতে এডিবি প্রস্তুত রয়েছে।’
এডিবির লক্ষ্য হচ্ছে—অনুকূল পরিবেশের উন্নয়নে নীতি সংস্কার, সম্ভাবনাময় প্রকল্প প্রস্তুতিতে পরামর্শ এবং অসার্বভৌম অর্থায়ন বৃদ্ধির মাধ্যমে বেসরকারি খাতকে সহায়তা করা। বেসরকারি খাতের উন্নয়নে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে এডিবি দেশের বিনিয়োগ পরিবেশের সীমাবদ্ধতা মোকাবিলা, লজিস্টিক উন্নয়ন, আর্থিক খাতকে গভীর করা এবং সরকারি বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত কাঠামো সংস্কারে সহায়তা করবে। এডিবি দেশের পরিবহন খাতে পিপিপি প্রকল্প চিহ্নিতকরণ ও প্রস্তুতিতে সহায়তা করছে এবং জ্বালানি, সামাজিক ও নগর উন্নয়ন খাতে সহায়তা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কাজ করছে। এছাড়া অসার্বভৌম পরিচালনা খাত, নবায়নযোগ্য শক্তি, ডিজিটাল অবকাঠামো, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, সবুজায়ন, পোশাক খাত, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মূল ক্ষেত্রগুলোতে ফোকাস করা হবে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করতে ১৬টি ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছে এডিবির ট্রেড অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স প্রোগ্রাম। তাছাড়া পরিবহণ, কৃষি ও অন্যান্য খাতে টেকসই উন্নয়নের অংশ হিসেবে ইক্যুইটি শেয়ার কিনছে এডিবি ভেঞ্চার।
ইয়াং বলেন, বেসরকারি খাতের উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নিতে বাংলাদেশকে মুদ্রা ও বিনিময় হার নীতি, অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ, জন-আর্থিক ব্যবস্থাপনা (পিএফএম), রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগ (এসওই), পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) আর্থিক খাত, বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও সরবরাহ এবং সামাজিক সুরক্ষাসহ বেশ কয়েকটি খাতের সংস্কার ত্বরান্বিত করতে হবে।