বাংলাদেশ গৃহহীন মুক্ত দেশ হতে চলেছে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় আর ১১ হাজার বাড়ি বিতরণের পর বাংলাদেশে কোনো গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষ থাকবে না। সরকার বস্তিবাসীদের জন্য অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করেছে। সেখানে তারা বস্তির সমান ভাড়া দিয়ে থাকতে পারবে।
গতকাল রোববার (৭ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে এলে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্যও অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের মধ্যে ঘর বিতরণ করা হচ্ছে। আমাদের সরকারের লক্ষ্য হলো বাংলাদেশে কাউকে ঘর ও ভূমিহীন রাখা হবে না।
কমিউনিটি ক্লিনিক প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য এগুলো খোলা হয়েছে।
সাক্ষাতে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে ইইউ। আমার পরবর্তী কর্মস্থল ব্রাসেলসেও আমি তিনি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে কাজ করব। সেখান থেকে আমি বাংলাদেশের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে পারব।’
‘ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ’ চালু প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, এই স্কিম আইনি পথে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে অভিবাসনের দ্বার উন্মুক্ত করবে। কারণ বাংলাদেশি দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিরা এ সুযোগ গ্রহণ করবে এবং কাজের জন্য বৈধ অনুমোদন পাবে।
বিদায়ী এ রাষ্ট্রদূত বলেন, যারা ইমিগ্রেশন করবেন তারা ৪-৫ বছর পর দেশে ফিরতে পারবেন। তাই এক্ষেত্রে মেধা পাচারের কোনো আশঙ্কা থাকবে না।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বিদেশে গিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করবে এবং দেশের জন্য অবদান রাখবে। তাই আমি এটিকে মেধা পাচার হিসেবে মনে করি না।’
লাকসাম-চট্টগ্রাম রুটে রেল সংযোগ প্রকল্পের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, এটি ব্যয়বহুল ও অলাভজনক বলে মনে করা হচ্ছে। ইইউ এই প্রকল্পে সমর্থন দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। রেল যোগাযোগের উন্নয়নে সম্পূর্ণ মনোযোগ থাকায় সরকার ইইউয়ের অর্থায়নে একটি উপযুক্ত ও টেকসই প্রকল্প খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ-ভারত কানেকটিভিটি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে চায়। বাংলাদেশের মধ্য দিয়েও ভারতের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে। আমরা ট্রান্স-এশিয়ান রেল কানেকটিভিটিকেও সেভাবে বিবেচনা করছি।
এ সময় বিমসটেককে শক্তিশালী করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা। কারণ থাইল্যান্ডের পর বাংলাদেশ এর পরবর্তী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করবে।
যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া দুই ইউরোপীয় দেশ ইউক্রেন ও রাশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান ইইউ রাষ্ট্রদূত। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সব সময় এই ইস্যুতে সোচ্চার হয়ে শান্তির আহ্বান জানিয়ে আসছি। শুধু ইউক্রেন-রাশিয়া ও গাজায় নয়, আমরা সর্বত্র শান্তি চাই।