‘ভয় দেখিয়ে সাংবাদিকদের সত্য প্রকাশ থেকে বিরত রাখা যাবে না’
গ্রেপ্তার ও ভয়ভীতি দেখিয়ে সাংবাদিকদের সত্য প্রকাশ থেকে বিরত রাখা রাখা যাবে না বলে উল্লেখ করেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। তাঁরা অবিলম্বে সাঈদ খানের মুক্তি, সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত এবং সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ সকল কালাকানুন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
আজ শনিবার (২৭ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খানের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের একাংশ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
ডিইউজের সিনিয়র সহসভাপতি রফিক মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরদার ফরিদ আহমেদ, বিএফইউজে সহ সভাপতি খায়রুল বাশার, সাবেক সহ সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, ডিইউজে সহসভাপতি রাশেদুল হক, বিএফইউজে নির্বাহী পরিষদ সদস্য অপর্ণা রায়, ডিইউজে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রফিক লিটন, নির্বাহী পরিষদ সদস্য তালুকদার রুমি, গাযী আনোয়ার, সাবেক দপ্তর সম্পাদক আমিরুল ইসলাম অমর, সাবেক নির্বাহী পরিষদ সদস্য এইচ এম আল আমিন, মফস্বল সাংবাদিক এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরী প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন ডিইউজের যুগ্মসম্পাদক দিদারুল আলম।
সমাবেশে ডিইউজের সাবেক সভাপতি এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, তৌহিদুল ইসলাম মিন্টুসহ সিনিয়র সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সত্য সংবাদ পরিবেশনের কারণে সাঈদ খানকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ করে রুহুল আমিন গাজী বলেন, সাংবাদিকরা কারো রক্ত চক্ষুকে ভয় পান না। যতই বাধা আসুক না কেন, সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা থেকে বিরত রাখা যাবে না। কোটাবিরোধী আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চারজন সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে বর্তমান সরকারের আমলে সাগর-রুনিসহ ৬১ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হলেও একটি হত্যারও বিচার হয়নি। কোটাবিরোধী আন্দোলন-পরবর্তী সারাদেশে গণগ্রেপ্তার চলছে। গভীর রাতে ব্লক রেইড দিয়ে ডিবি পরিচয়ে ঘরে ঘরে ঢুকে মোটা অংকের চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। অথচ এর আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন কোটা আন্দোলনকারীদের দমনে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। সবকিছু ব্যর্থ হওয়ার পর পুলিশকে সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়ে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের এ শীর্ষ নেতা বলেন, মসনদ টিকিয়ে রাখতে ১৮ কোটি মানুষকে গ্রেপ্তার করবেন? এটা সম্ভব নয়। গণগ্রেপ্তার বন্ধ করে মোবাইলফোন ইন্টারনেট খুলে দিন। কারণ, মোবাইলফোন ইন্টারনেট ছাড়া কোনো সভ্য সমাজ চলতে পারে না।
রুহুল আমিন গাজী অবিলম্বে কোটাবিরোধী আন্দোলনে সাংবাদিকসহ নিরস্ত্র শত শত ছাত্র হত্যার বিচার দাবি করেন।
খুরশীদ আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীরা কথায় কথায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ‘আগুন সন্ত্রাসী’ বলে অভিযোগ করে আসছেন। অথচ কোটাবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে শ্রমিক লীগের জনৈক নেতা বাসে আগুন দেওয়ার জন্য ৫ লাখ টাকায় একজনের সঙ্গে কন্ট্রাক্ট করার ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশ বেস্টনির মধ্যে দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন-জনমানব শূন্য এ এলাকায় কারা বাসে আগুন দিয়েছে? মিথ্যাচার করে টিকে থাকতে পারবেন না। হত্যার বিচার একদিন হবেই।
সকল সাংবাদিকদের প্রকৃত চিত্রটি তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে সরদার ফরিদ আহমদ বলেন, সাংবাদিকদের কাজ সত্য প্রকাশ করা। সাঈদ খান সেই কাজটিই করেছেন। সত্য প্রকাশ করা কি অপরাধ? সত্য কখনো গোপন থাকে না। সরকার যে ন্যারিটিভ তৈরি করছে তা জনগণ বিশ্বাস করে না। কোরণ ঘটনা কী ঘটেছে তা সাধারণ মানুষ নিজের চোখে দেখেছে।