কর্মস্থলে ফুল দিয়ে পুলিশকে বরণ করে নিয়েছে বিএনপি
লক্ষ্মীপুরে কর্মস্থলে ফিরেছে ৬ থানার পুলিশ। তবে দুটি থানায় এখনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। পুলিশকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বিএনপি। এতে জেলা পুলিশ, সদর মডেল ও রামগতি থানা পুলিশকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছে তারা। এরমধ্যেও শনিবার (১০ আগস্ট) দিনব্যাপী লক্ষ্মীপুর শহর যুবদলের নেতাকর্মীরা ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সদর মডেল থানা পাহারায় ছিল।
এর আগে শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় বিএনপি। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু বকর ছিদ্দিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) হাসান মোস্তফা স্বপন, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার। বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, যুগ্ম-আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ, বিএনপি নেতা নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া, হারুনুর রশিদ ব্যাপারী প্রমুখ।
জানা গেছে, ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হামলা-গুলি করা হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গুলিতে চারজন শিক্ষার্থী মারা যায়। পরে আন্দোলনকারীদের গণপিটুনিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ জন মারা গেছে। ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার খবরে লক্ষ্মীপুরের সর্বত্র বিজয় মিছিল করে জনতা। এতে বিক্ষুব্ধ জনতা রায়পুর ও রামগঞ্জ থানায় ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে। অস্ত্র-গুলিও লুট করা হয়। রামগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ তিনজন মারা যায়। এদিকে রায়পুর ও রামগঞ্জে লুট হওয়া কয়েকটি অস্ত্র ও গুলি ফেরত দেওয়া হয়েছে। অস্ত্র-গুলি দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছে। ইতোমধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর, রামগতি, কমলনগর ও চন্দ্রগঞ্জ থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রায়পুর ও রামগঞ্জ থানায় কার্যক্রম শুরু হতে কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা থানার থানায় অবস্থান নিয়েছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ জন পুলিশ থানায় হাজির হয়েছে। আরও প্রায় ৩০ জন সদস্য শিগগিরই থানায় ফিরবেন। সবার সম্মিলিত সহায়তায় চলমান সংকট দ্রুতই কেটে যাবে।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, আমরা থানায় আছি। ভাঙচুর-আগুন দেওয়ার পর থানার অস্ত্র-গুলি লুট করা হয়েছে। কয়েকটি অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্রগুলো সেনাবাহিনীর কাছে রয়েছে। এখন থানা গোছানোর কাজ চলছে। খুব শিগগিরই কার্যক্রম শুরু করা হবে।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, আমরা শুক্রবার কার্যক্রম শুরু করেছি। স্থানীয়রা আমাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়।
জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান বলেন, থানাগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমরা জেলা পুলিশকে স্বাগত জানিয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে সবগুলো থানা পুলিশকে সহযোগিতা করা হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ বলেন, দেশব্যাপী সহিংসতার কারণে পুলিশের কর্মবিরতি ছিল। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে চারটি থানার কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। রায়পুর ও রামগঞ্জ থানার কার্যক্রম চালু হতে আর কিছুদিন সময় লাগবে। এ দুটি থানায় ৫ আগস্ট দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে। এতে থানার অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়।