জোড়া লাগানো যমজ শিশু : দুশ্চিন্তায় দিনমজুর মা-বাবা
পেট ও বুক জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম দিয়ে চরম দুশ্চিন্তা ও বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র দিনমজুর মা-বাবা। গত মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) পাবনার ফরিদপুরে একটি ক্লিনিকে এই জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম হয়।
দুটি শিশুই মেয়ে। এই যমজ শিশু দেখতে নানা বয়সী মানুষ ক্লিনিকে ভিড় করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আটঘরিয়া উপজেলার আতাইকুলা থানার আয়েনগঞ্জ রাজাপুর গ্রামের দিনমজুর সিফাত আলী ও আরজিনা খাতুন দম্পতির সন্তান এই জমজ শিশু। এটি তাদের চতুর্থ সন্তান। এর আগে তাদের একটি ছেলে ও দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
আরজিনা খাতুন এনটিভি অনলাইনকে জানান, গত মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর প্রসব ব্যথা শুরু হলে পাশের ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর এলাকার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে যমজ মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। যমজ শিশুর জন্ম হলেও যখন জানতে পারেন তাদের বুক ও পেট জোড়া লাগানো তখন দুশ্চিন্তায় মাথায় বাজ পড়ে।
আরজিনা আরও জানান, এর আগে তিনবার আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়েছে। ডাক্তাররা একবারও বলেননি আমার যমজ সন্তান হবে বা বাচ্চা জোড়ার লাগানো। শুধু বলেছে বাচ্চার পজিশন ঠিক নেই। নরমাল ডেলিভারি হবে না, সিজার করা লাগবে। এখন জমজ সন্তান বুক ও পেট জোড়া লাগানো হবে ভাবতেই পারিনি। এখন কী করার আছে। আল্লাহ দিয়েছেন। চেষ্টা করব তাদের সুস্থ ভাবে রাখার।
অপারেশন করেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও স্বাস্থ্য কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. ডলি রানী সাহা। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, অপারেশন ভালোভাবেই হয়েছে। বাচ্চা দুটি সুস্থ আছে। তবে তারা একটি ফুসফুস দিয়ে শ্বাস গ্রহণ করছে। বুক ও পেট জোড়া লাগানো হলেও পায়ু পথ ও মাথা আলাদা রয়েছে।
লাইফ কেয়ার হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রত্না খাতুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বাচ্চা দুটি বের করতে অনেক কষ্ট হয়েছে। যমজ বাচ্চা অনেক দেখেছি, তারা আলাদা হয়েছে। কিন্তু এমন বুক ও পেট জোড়া লাগানো জমজ বাচ্চা এর আগে দেখিনি। বাচ্চা দুটি ভালোভাবেই খাবার গ্রহণ করছে।’
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. দেওয়ান শহীদুল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এ ধরনের শিশু বিশেষজ্ঞ সার্জারি চিকিৎসক দিয়ে অপারেশন করালে অনেক সময় সুস্থ হয়ে যায়। এ জন্য সবার সহযোগিতা দরকার।’