কড়া পাহারায় আদালতে ইনু
রাজধানীর নিউমার্কেটে দোকানের কর্মচারী শাহজাহান আলীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে ১০ দিনের রিমান্ড শুনানি উপলক্ষে আদালতে হাজির করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল কড়া পুলিশি পাহারায় আদালতে নিয়ে আনে। এ সময় নিরাপত্তার প্রয়োজনে তাকে বহনকারী গাড়ির সামনে-পেছনে পুলিশের তিনটি প্রটেকশন গাড়ি ছিল। পরে তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এরপরে ইনুকে আদালতে শুনানির জন্য নেওয়া হলে তাকে জুতা ও ডিম ছোড়েন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এদিন বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে ঢাকার সিএমএম আদালতে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনজীবীরা ম্লোগান দেন ইনুর গায়ের চামড়া, তুলে নেবো আমরা; ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি ইনুর ফাঁসি চাই।
এ দিকে ইনুকে আদালতে আনার খবরে বিকেল ৪টা থেকে কোর্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ সময় আইনজীবী ও সাংবাদিক ছাড়া বাকি সবাইকে আদালত এলাকা থেকে বের করে দেন সেনাবাহিনী সদস্যরা। এ ছাড়া আগে থেকেই আদালত এলাকায় অবস্থান ছিলে পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্যের।
আদালতসূত্রে জানা গেছে, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিকে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দারের আদালতে এই রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে সোমবার বিকেলে উত্তরার একটি বাসা থেকে ইনুকে গ্রেপ্তার করে ডিবির একটি টিম।
নথি থেকে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জাসদ। ইনু ২০১৪-২০১৯ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারে তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে কুষ্টিয়ার একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শাহজাহান আলীকে হত্যার অভিযোগে তার মা আয়শা বেগম (৪৫) নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয় অজ্ঞানামা।
আরজিতে বাদী আয়শা বেগম বলেন, আমার ছেলে শাহজাহান আলী নিউমার্কেট থানার মিরপুর রোডের বলাকা সিনেমা হলের গলির মুখে পাপোশের দোকানে কাজ করতো। প্রতিদিনের মতো ১৬ জুলাই সকাল ৯টার দিকে দোকানে কাজ করার জন্য যায়। ওদিন সন্ধ্যায় অজ্ঞাতপরিচয় একজন ব্যক্তি ছেলের মোবাইলফোন নম্বর থেকে আমার ব্যবহৃত মোবাইলফোনে কল করে জানায়, শাহজাহান গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ধানমণ্ডি পপুলার হাসপাতালে ভর্তি। আমি সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক পপুলার হাসপাতালে যাই এবং জানতে পারি, ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমি তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই এবং মর্গে গিয়ে ছেলের মরদেহ শনাক্ত করি।
তখন বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে জানতে পারি, গত ১৬ জুলাই আমার ছেলে অজ্ঞাতপরিচয় কোটাবিরোধীদের কর্তৃক গুরুতর রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়ে নিউমার্কেট থানাধীন মিরপুর রোডের টিটি কলেজের বিপরীত পাশে কাদের আর্কেড মার্কেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর পড়ে ছিল।