বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পর শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড ছিল রহস্যজনক : হাফিজ উদ্দিন
‘বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘটনার পর শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড রহস্যজনক ছিল’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। আজ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে ২০০৯ সালে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও এখনও এটি ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। বিডিআর হত্যাকাণ্ড ছিল অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার উদ্দেশ্যে এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল।’
বিএনপিনেতা হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নতুন করে বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। কমিশন গঠন করতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নতুন করে তদন্ত করার উদ্যোগ নেওয়ায় তাঁকে ধন্যবাদ।’
পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে মেজর (অব.) হাফিজ আরও বলেন, ‘দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর নৈতিক মনোবল ভেঙে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে এই হত্যাকাণ্ড। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বসহ অনেকেই জড়িত। বিডিআরপ্রধান শাকিল আহমেদ সেনাপ্রধানের কাছে সাহায্য চাইলেও তিনি সেনাবাহিনী পাঠাননি। বিদ্রোহের কথা শুনলে, বিদ্রোহ দমন করা সেনাকর্মকর্তার দায়িত্ব। সেনাবাহিনী হত্যাকাণ্ডের পরপরই সাঁজোয়া যানসহ মিলিটারি অ্যাকশনে যাওয়ার কথা থাকলেও সেনাপ্রধান ৪৬ ব্রিগেড কমান্ডারকে করতে দেননি। সরকারপ্রধানের ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।’
সুবেদারকে বাহিনী প্রধান করার নজির পৃথিবীর ইতিহাসে নেই উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সরকারপ্রধান ও সরকারি দলের যোগসাজসেই বিডিআর হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের পর কয়েকটি কমিশন করলেও সেগুলোর কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। সেনাবাহিনীর ইনকোয়ারির রিপোর্টটিও অন্ধকারে রয়ে গেছে।’
মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সরকার বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু পরিণতির কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। জেনারেল মঈনের কারও কাছ থেকে কোনো নির্দেশের প্রয়োজন ছিল না, তারপরও ব্যবস্থা নেয়নি। সেনাবাহিনীর মনোবল ধ্বংস করতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল।’
‘শেখ হাসিনা কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করলে সেখানে হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করা ৫০ থেকে ৬০ জন অফিসারকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়’ উল্লেখ করে সেনাবাহিনীতে তাদের পুনর্বহালের আহ্বান জানান মেজর (অব.) হাফিজ। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পুনতদন্ত সঠিকভাবে করতে বিএনপি সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগ। সেনাবাহিনীকে দলীয়করণ এমনভাবে করেছে, জেনারেলরা কথা বললে যেন ছাত্রলীগের নেতারা বক্তব্য দিচ্ছে। সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করার প্রাথমিক পদক্ষেপ বিডিআর হত্যাকাণ্ড। দেশের সার্বভৌমত্ব ধ্বংসে যেসব দল, দেশ ভূমিকা নিয়েছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহসহ অন্যান্যরা।