এক উপাচার্য ও দুই সংসদ সদস্যের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু
এক ইউিভার্সিটির উপাচার্য এবং দুই সংসদ সদস্যের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
আকতারুল ইসলাম আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুনাজ আহমেদ নুরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
২০১৯ সালের মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে বিভাগ অনুমোদনের আগেই ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন ডাটা ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অ্যানালাইটিকস প্রোগ্রাম নামে বিভাগ চালু হওয়ার আগেই প্রতিষ্ঠানটি ডাটা ল্যাব স্থাপন করে। ওই ডাটা ল্যাব স্থাপনে ৫ কোটি ৯৪ লাখ ৬৪ হাজার ২০২ টাকা খরচ দেখানো হয়।
দুদকের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ‘জেভি অব বিএমআইটি সলিউশনস লিমিটেড’কে কার্যাদেশ দেওয়ার জন্য ‘আই থিসিক্সটি বাংলাদেশ লিমিটেড’কে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়। একটি নির্দিষ্ট প্রকল্পের জন্য বরাদ্দের আগে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সর্বোত্তম ও সবচেয়ে অর্থনৈতিক উপায় কিনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামের প্রতিষ্ঠানে ডাটা সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পে প্রকল্প সঠিকভাবে প্রাক মূল্যায়ন করা হয়নি।
অন্যদিকে ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য মনোনীত হওয়ার পর থেকে ঢাকার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, সাদেক খান মুরগি মার্কেট, সাদেক খান শুটকি মার্কেট, সাদেক খান ইট মার্কেট, সাদেক খান বালি মার্কেট, সাদেক খান বস্তি ও পেট্রোল পাম্প নামের সব স্থাপনা হিন্দু সম্পত্তি দখল করে তৈরি করেছেন। তার দাখিল করা নির্বাচনি হলফনামায় নিজ নামে ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা অকৃষি জমি, যৌথ নামে ১ কোটি ৩১ লাখ ৫২ হাজার টাকার জমি দেখিয়েছেন। তিনি ৫০ শতাংশ অংশীদার, ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকার অ্যাপার্টমেন্ট, বাড়ি, ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার পরিবহণ ও অন্যান্য সম্পদ রয়েছে।
স্ত্রীর নামে ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার গাড়ি, ১ কোটি ১২ লাখ ৩ হাজার টাকা মূল্যের জমি ও অন্যান্য সম্পদ রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেন সাদেক খান। এছাড়াও তার দাখিল করা হলফনামায় সর্বমোট ৫২ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং জমিসহ দুটি একক বাড়ি ও একটি যৌথ বাড়ি, যার মূল্য সাড়ে ৫ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। তার নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলেও তথ্য পেয়েছে দুদক।
এ ছাড়া পাবনা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। হলফনামা অনুযায়ী, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন তার সম্পদ ছিল ৪৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সম্পদ দেখিয়েছেন ৭ কোটি ৫৬ লাখ ১২ হাজার ৫৬৮ টাকা।
এর মধ্যে অন্যতম হলো, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৩ কোটি ৬২ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮৩ টাকা। শেয়ার ক্রয় ৪ লাখ ৯০ টাকার। বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ৩ কোটি টাকা। বাস-ট্রাক ও মোটরগাড়ি ক্রয় ৭৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬৮৫ টাকার। এছাড়া নিজ নামে ৮ কোটি ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৫৮২ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। দেশ-বিদেশে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলেও জানতে পেরেছে দুদক।