সাবেক এসপিসহ ৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার আলোচিত সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মিজানুর রহমানের ডিভোর্সি স্ত্রী সাবেক এসপিসহ ছয়জনের নামে আদালতে মামলা করেছেন। আজ রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন কলেজছাত্রী ওসির সাবেক স্ত্রী ঝর্ণা আক্তার ওরফে বর্ষা (১৯)। তাঁর বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায়।
আদালত পিবিআইকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে আদেশ দিয়েছেন। বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযুক্তরা হলেন জয়দেবপুর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ মো. মিজানুর রহমান, সাবেক পুলিশ সুপার কাজী সফিকুল আলম, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম, ওসি ডিবি দেলাওয়ার হোসেন ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের স্টেনোগ্রাফার মো. আব্দুল করিম।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ জানুয়ারি রাতে কলেজছাত্রী ঝর্ণার ফোন পেয়ে গাজীপুরের একটি রিসোর্ট থেকে উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। পরে ধর্ষণ মামলা থেকে রক্ষা পেতে গাজীপুরের সাবেক এসপি কাজী শফিকুল আলম ও ডিবি পুলিশের ওসি দেলাওয়ার হোসেনের পরামর্শে ওই ওসির প্রথম স্ত্রীর উপস্থিতিতে ১৮ জানুয়ার কলেজছাত্রী ঝর্ণাকে বিয়ে করেন ওসি সৈয়দ মিজানুর রহমান। বিয়ের পর ওসি মিজান একদিনের জন্যও ছাত্রীর সঙ্গে সংসার করেননি এবং কোনো খোঁজখবর নেননি। ধর্ষণ মামলার আলামত নষ্ট করে গত এপ্রিল মাসে ওই কলেজছাত্রীকে গোপনে একতরফা তালাক দেন ওসি মিজান।
আজ দুপুরে ওই কলেজছাত্রী তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে গাজীপুর প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।
কলেজছাত্রী জানান, রিসোর্ট থেকে ডিবি পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে যায়। তখন তিনি পুলিশ সুপারের কাছে সব জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি ন্যায়বিচারের আশ্বাস দেন। কিন্তু বিচার না করে উল্টো তাঁকে ওসির সঙ্গে বিয়ে দিয়ে ধর্ষণ মামলা থেকে রক্ষা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ হেড কোয়াটারে ওসি মিজানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে এসপি কাজী শফিকুল আলম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন, মিরাজুল ইসলাম ও ওসি ডিবিকে ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দিতে বলেন। তদন্ত কমিটির সদস্যরা ওসি মিজান দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দায়সারা রিপোর্ট দেন।
কলেজছাত্রী অভিযোগ করেন, এসপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। গাজীপুরের সাবেক এসপিসহ তার অধীনস্থ কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি এ ঘটনার জন্য তাঁদের বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জয়দেবপুর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি বিয়ে করেছি। বনিবনা না হওয়ায় গত এপ্রিল মাসে আইন মেনে তালাক দিয়েছি।’