গণঅভ্যুত্থানে নিহত আফনান জিপিএ ৪.১৭ পেয়েছেন
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত সাদ আল আফনান পাটওয়ারী এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ১৭ পেয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে আফনানের মা নাছিমা আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে এ আনন্দের দিনে আফনানের শূন্যতা অনুভব করছেন তার মা-বোন ও শিক্ষকরা। তার এই ফলাফলে খুশির পরিবর্তে তাদের মন বিষাদে ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছে।
আফনান ভিক্টোরি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ (রোল : ১৭৮০৩৮ ও রেজিস্ট্রেশন : ১৯১১৩৫৩৩৬৭) নিয়েছিলেন। তিনি পৌর শহরের বাঞ্চানগর গ্রামের বাস টার্মিনাল এলাকার মৃত সালেহ আহমেদের ছেলে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এনামুল হক বলেন, আফনান লক্ষ্মীপুরের প্রথম শহীদ। তিনি এইচএসসিসহ দুনিয়ার সব পরীক্ষায় সফলতার সহিত কৃতকার্য হয়েছেন। আমরা দোয়া করি আল্লাহ যেন দুনিয়ার মতো পরকালেও তাঁকে সফলতা লাভের তৌফিক দান করেন। একই সঙ্গে মহান আল্লাহ যেন তাঁকে শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আরমান হোসেন বলেন, কোটা বৈষম্য দূর করতে যারা আন্দোলন করেছেন তারা সবাই মেধাবী ছিলেন। মেধার স্বীকৃতি দেওয়া ও নেওয়ার জন্য মেধাবী শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছেন। তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন। শহীদ আফনান জিপিএ ৪ দশমিক ১৭ পেয়ে মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। এটিও প্রমাণিত হয়েছে, প্রকৃত মেধাবীরাই এ আন্দোলন করেছেন।
আফনানের মা নাছিমা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আফনানের ভালো ফলাফল আমার কাছে খুশির খবর। কিন্তু যাকে নিয়ে আমি খুশি উদযাপন করব, সে তো আমার কাছে নেই। গুলি করে আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমার কোল শূন্য করে দিয়েছে।
ভিক্টোরি কলেজের অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ বলেন, আফনান ভালো ফলাফল করেছে। এটি আনন্দের। কিন্তু সে তো আমাদের মাঝে নেই। তার ফলাফল শুনে আনন্দিত হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি, আমাদের মন আজ বিষাদে ভারাক্রান্ত।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৪ আগস্ট শহরের মাদাম ব্রিজ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আফনান। পরে ১৪ আগস্ট আফনানের মা নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপুকে প্রধান করে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয় ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।