বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের কাজে আশাবাদী আইন উপদেষ্টা
দেশে ঢালাও মামলার বিষয়টি আইনগতভাবে কীভাবে সামাল (ট্যাকল) দেওয়া যায়, সে বিষয়ে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। গত ৩ অক্টোবর আট সদস্যের ‘বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন’ গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এরপর আজ মঙ্গলবার একথা বলেন উপদেষ্টা। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের কাজে আশাবাদী।
এই কমিশনের প্রধান হলেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান। অন্য সদস্যরা হলেন—হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমদাদুল হক, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফরিদ আহমেদ শিবলী, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাইয়েদ আমিনুল ইসলাম ও মাসদার হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানিম হোসেইন শাওন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন।
আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সভাকক্ষে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন আইন উপদেষ্টা। বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ওই বৈঠক চলে। শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘দুটি ব্যাপারে ওনাদের (বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) কাছে নির্দিষ্টভাবে সহায়তা চেয়েছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে গায়েবি মামলা হতো। সরকারের পক্ষ থেকে গায়েবি মামলা দিত। আর এখন আমরা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা দিচ্ছি না। সাধারণ লোকজন, ভুক্তভোগী লোকজন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, তারা অন্যদের ব্যাপারে ঢালাও মামলা দিচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘ঢালাও মামলার একটা খুব মারাত্মক প্রকোপ দেশে দেখা দিয়েছে, এটি আমাদের অত্যন্ত বিব্রত করে। আমরা অনেক ধরনের আইনি সংস্কারের কথা ভাবছি। আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছি।…ওনাদের কাছে আমাদের একটা প্রত্যাশা যে ওনারা আইনগতভাবে কীভাবে বিষয়টি ট্যাকল (সামাল) করা যায়—পরামর্শ নিতে এসেছি। ওনারা পরামর্শ দেবেন, কাজ করে, রিসার্চ (গবেষণা) করে জানাবেন।’
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘নেক্সটে (পরবর্তী সময়ে) উচ্চ আদালতে যে বিচারক নিয়োগ হবে, সেটি আমরা একটা আইনের মাধ্যমে করতে চাচ্ছি। আইনের মাধ্যমে করার দাবি সমাজে বহুদিন যাবৎ আছে। ২০০৮ সালে এ রকম একটা আইন হয়েছিল। পরে তা আইনে রূপান্তরিত হয়নি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার এসে ওটাকে আইনে রূপান্তরিত করেনি। ওই আইনটা আরও বেশি যুগোপযোগী করার জন্য ওনাদের (বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সহায়তা চেয়েছি, যাতে নেক্সটে যে নিয়োগ হবে সেটি যাতে আমরা আইনের মধ্য দিয়ে করতে পারি।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘আলোচনায় কমিশনের কাজের অগ্রগতি কতটুকু—এটি জানতে চেয়েছি। ওনারা যেভাবে এগোচ্ছেন, আমি খুবই আশাবাদী।...ওনারা (বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) কিছু সমস্যার কথাও বলেছেন। ওনাদের যথেষ্ট সাপোর্ট (সহায়তা) দিতে পারছি না।’