উন্নয়ন ব্যয়-বিনিয়োগ স্থবিরতায় অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা পরিকল্পনা উপদেষ্টার
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন কোনো বেসরকারি বিনিয়োগ না থাকা এবং প্রায় স্থবির সরকারি উন্নয়ন ব্যয়ের কারণে দেশ অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে পড়তে পারে। একদিকে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগ করছেন না, অন্যদিকে সরকারি উন্নয়ন ব্যয় বাড়ানো যাচ্ছে না। এর ফলে অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি করবে।’
আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি মিলনায়তনে একনেক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
উপদেষ্টা বলেন, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না এবং সুদের হার অনেক বাড়ানো হয়েছে। ‘ফলে উদ্যোক্তারা নতুন বিনিয়োগের ব্যাপারে কোনো আগ্রহী হচ্ছেন না।’
উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সরকারের কাছ থেকে ছাড়পত্র পাওয়া প্রকল্পগুলো যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে এই অর্থবছর শেষ পর্যন্ত। প্রকল্পগুলো ভালো হলে এবং নতুন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করা হলেও আমরা নীতিগত সমন্বয়ের পর্যায়ে আছি।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এর মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়নের হার ত্বরান্বিত করতে পারব। এটি জরুরি, কারণ অস্থিতিশীলতা, নিরাপত্তাহীনতা এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও শৃঙ্খলাহীনতার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে দেশে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্থবির পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’
উপদেষ্টা বলেন, অপচয়, দুর্নীতি ও অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বন্ধ করতে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের হার ৮ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি। এটা সত্য যে, উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন খুব ধীরগতিতে চলছে। অন্তর্বর্তী সরকার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার আগে প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করবে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, যেকোনো নির্বাচনি এলাকার জন্য যেকোনো সময় নতুন প্রকল্প প্রণয়ন করা রাজনৈতিক সরকারের জন্য ভালো সুযোগ।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, ‘তবে আমাদের কোনো নির্বাচনি এলাকা নেই, আমাদের সময় কম এবং অবশ্যই আমাদের সেরকম কোনো প্রবণতা নেই, এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শিক্ষা উন্নয়নে কিছু উদ্ভাবনী, নতুন মাত্রার উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনের বিষয়ে আলোচনার জন্য উপদেষ্টা পরিষদ আবার বসবে।
মূল্যস্ফীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অর্থনীতিতে স্থবির পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন ড. ওয়াহিদউদ্দিন। ‘এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই,’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি কর্মসংস্থানের স্বার্থে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড যেমন গতিশীল হবে, তেমনি নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হওয়ায় অর্থনীতি সচল হবে।
খুব শিগগিরই নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হবে বলেও নিজেদের ভাবনার কথা জানান তিনি।