ভারতের অন্তত ৪৯ গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে ভুয়া খবর : রিউমর স্ক্যানার
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন। কঠোর নিরাপত্তায় রাখা হলেও কোথায় আছেন, তা নির্দিষ্ট করেনি দেশটির সরকার। যদিও সেখানে অবস্থান নিয়েই নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আওয়ামী লীগের সভাপতি–জানিয়েছেন উপদেষ্টারা। তার সেই ষড়যন্ত্রের অংশীদার সেদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ইনফ্লুয়েন্সার। এর নানা প্রমাণও মিলেছে। এমন এক মুহূর্তে ভয়ঙ্কর তথ্য তুলে ধরল রিউমর স্ক্যানার। আজ শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের অন্তত ৪৯ গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে ভুয়া খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের দীর্ঘ শাসনামলের অবসান হলে ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এর আগে সরকার পতনের পর সারা দেশে সংঘর্ষ, হত্যাকাণ্ড, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। রিউমর স্ক্যানার তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, এই অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে ভারতেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে ছড়ানো হচ্ছে একের পর এক গুজব। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে, রাষ্ট্র ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ১২ আগস্ট থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত অন্তত ১৩টি ভুয়া খবর পাওয়া গেছে। এমন ভুয়া খবর প্রচারের তালিকায় ভারতের অন্তত ৪৯টি গণমাধ্যমের নাম উঠে এসেছে।
কোন গণমাধ্যমে কতোটি ভুয়া খবর
রিপাবলিক বাংলা সর্বাধিক পাঁচটি গুজব প্রচার করেছে। পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস, জি নিউজ এবং লাইভ মিন্ট, যারা প্রত্যেকে অন্তত তিনটি করে গুজব প্রকাশ করেছে। এছাড়া, রিপাবলিক, ইন্ডিয়া টুডে, এবিপি আনন্দ এবং আজতক অন্তত দুটি করে গুজব প্রচার করেছে। বাকি ৪১টি গণমাধ্যম অন্তত একটি করে গুজব প্রচার করেছে।
গুজবের মধ্যে যা ছিল
শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তার নামে ভুয়া খোলা চিঠি, মুসলিম ব্যক্তির নিখোঁজ পুত্রের সন্ধানে মানববন্ধন করার ভিডিওকে হিন্দু ব্যক্তির দাবিতে প্রচার, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার ভুয়া খবর, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ভিত্তিহীন দাবি, ট্রাম্পের বিজয়ের পর ড. ইউনূস ফ্রান্সে পালিয়ে যাওয়ার ভুয়া দাবি, পাকিস্তানি জাহাজের মাধ্যমে অস্ত্র আনার মিথ্যা দাবি, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী হিসেবে প্রচার, বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ হওয়া গুজব, বাংলাদেশে মুসলিমদের হামলায় হিন্দু মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের দাবিতে ভারতের প্রতিমা বিসর্জনের ভিডিও প্রচার, শ্যামলী পরিবহনের বাসে হামলার মিথ্যা তথ্য চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবীর ওপর হামলার ভুয়া দাবি এবং বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা হতে পারে জানিয়ে যুক্তরাজ্য ভ্রমণ সতর্কতা জারির বিভ্রান্তিকর খবর।