আওয়ামী লীগকে অবশ্যই জনতার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে : আলাল
আধিপত্যবাদ বিরোধী বলতে শুধু ভারত নয়, আধিপত্যবাদের জন্য যারা আগ্রাসী হবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, বহুমুখী সৌন্দর্যের যে দ্বিমত, সেটাই হচ্ছে একমত। আমাদের ভিন্নমত থাকবে, কিন্তু জাতীয় স্বার্থের ব্যাপারে আমরা একমত। আওয়ামী লীগকে অবশ্যই জনতার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
আজ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে আলাল এসব কথা বলেন।
আলাল বলেন, আওয়ামী লীগকে অবশ্যই জনতার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আগে অনুশোচনা প্রকাশ করতে হবে। এখন পর্যন্ত যারা একবারের জন্য বলেনি যে, আমরা জাতির কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। পুলিশের আইজিপি, র্যাবের ডিজি, বিজিবি প্রধান, সেনাবাহিনী জাতির কাছে ক্ষমা চাচ্ছেন। কিন্তু একটা রাজনৈতিক দল যেটার ভিত্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষ, সেই আওয়ামী লীগের কোনো নেতা আজ পর্যন্ত বলেননি যে আমরা হত্যাকাণ্ডের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাই।
যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ নামের সাথে তাদের চরিত্র পরিবর্তন করতে অভ্যস্ত। প্রথমে জন্ম নিয়েছে আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে। কিছুদিন পরে মুসলিম কেটে শুধু আওয়ামী লীগ। এরপরে আওয়ামী লীগ বাদ, মুসলিম বাদ দিয়ে বাকশাল করেছে। আবার কিছুদিন পরে আওয়ামী লীগ। জন্মের পর থেকে যারা চারবার নিজেদের নাম পরিবর্তন করে তাদের চরিত্রও ঘন ঘন পরিবর্তন করবে। তাদের সাথে কোনো আপস হতে পারে না।
গোলটেবিল বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ দলটি শুধু চোরের দল নয়, এরা ডাকাত, খুনির দল। এরা জবর দখল করে সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। অতএব এদের ব্যাপারে কোনো কম্প্রোমাইজ করা উচিত হবে বলে আমি মনে করি না। আগে বিচার করতে হবে। বিচার করে শাস্তি দিতে হবে। বিচার করে শাস্তি দেওয়ার আগে কোনো কম্প্রোমাইজের কথা বলা যাবে না। বড় দল হোক কিংবা ছোট দল, বিচার ছাড়া কোনো স্কোপ আমরা দিতে চাই না এবং দিতে পারি না। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা ছিল পরাধীনতার। এটা স্বীকার করতেই হবে। এই পরাধীনতা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আল্লাহ আমাদেরকে স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ভারত বাংলাদেশকে সাহায্য করেছে; এতে তার একটা স্বার্থ ছিল। ভারত পাকিস্তান ভাঙার জন্য আমাদেরকে সাহায্য করেছে। তার মানে এই নয়, যে আমরা তাদের আনুগত্য ছেড়ে আপনাদের আনুগত্য করবো।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, বিএনপি চাচ্ছে আওয়ামী লীগকে আগামীতে নির্বাচনের সুযোগ দিতে। অনেকে টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের নেতাদেরকে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্য করেছে। যারা এটা করেছে তাদের মধ্যে দেশপ্রেম নেই। আওয়ামী লীগ থাকবে কি থাকবে না এবং নির্বাচন এগুলো নিয়ে একমত থাকতে হবে। আমাদেরকে জাতীয় প্রশ্নে একমত হওয়া প্রয়োজন।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, আমাদের চিন্তা ভিন্ন হতে পারে কিন্তু আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ইসলাম হোক আমাদের মূল চুক্তি। সংস্কার এবং ঐক্য হোক ইসলামের ভিত্তিতে। ভারত সম্প্রদায়িকতার শীর্ষে। বাংলাদেশে যাতে সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি হয় সেজন্য তারা খুঁত সৃষ্টি করছে। তারা দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। রাজনীতি করি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পাগল হওয়া যাবে না। রাজনীতি করি মূলত রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
ইউসুফী বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আসার পর থেকে বিডিআর হত্যার বিচার পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার মানে পরিষ্কার হয়ে গেছে, বিডিআর হত্যার পেছনে ভারত জড়িত রয়েছে।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির আল্লামা সরোয়ার কামাল আজিজির সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে আরও অনেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।