বিডিআর ধ্বংস করে বিজিবিকে চৌকিদারের দায়িত্ব দেয় আ.লীগ : শফিকুর রহমান
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত ১৫ বছরে অসংখ্য মায়ের বুক খালি হয়েছে। আয়নাঘরে বন্দি রেখে জঙ্গিবাদের নাটক সাজানো হয়েছে। অসংখ্য মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের নামে বিনা ভোটে এমপিদের পাস করানো হয়েছে, নিশিরাতে ভোট হয়েছে এবং ২০২৪ সালে আমি আর ডামির নির্বাচন হয়েছে। পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের দেশ প্রেমিক বিডিআর বাহিনীকে ধ্বংস করে সীমান্তে বিজিবিকে চৌকিদারের দায়িত্ব দিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গাইবান্ধা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখার কর্মী (রোকন) সম্মেলনে জামায়াত আমির এসব কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, অফিস-আদালত থেকে ঘুষ-দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে। চাঁদাবাজি, দখলদারি বন্ধ করতে হবে। এ জন্য জামায়াতে ইসলামী সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
আগামীর বাংলাদেশ বৈষম্যহীন হবে দাবি করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে সাম্যের, বৈষম্যহীন। সকল ক্ষেত্র থেকে বৈষম্য দূর করতে হবে, যেখানে সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘুর ধর্মীয় ভেদাভেদ থাকবে না। সব মানুষই দেশের নাগরিক হিসেবে পরিচিত হবে। ধর্মের ভিত্তিতে কোনো বিভাজন করা হবে না। মসজিদ যদি পাহারা দেওয়া না লাগে তবে মন্দিরও পাহারা দেওয়া লাগবে না। সকলেই শান্তিতে সহাবস্থান করবে।
জামায়াতের আমির এ সময় স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, অত্যাচার, বাড়িঘর লুটপাটের আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেন।
বর্তমান সরকারের কাছে গাইবান্ধায় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি করেন জামায়াতের আমির।
সম্মেলন শেষে নির্বাচন প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরাও সংস্কার পূর্বক নির্বাচন চাই। আগামী নির্বাচনে প্রস্তুতি নিতে তিন ধরনের চিন্তা ভাবনা রয়েছে। সমঝোতা, জোট অথবা একক নির্বাচন। তবে, অতীতের মতো কোনো নির্বাচন চাই না। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে একটি সুন্দর নির্বাচন চাই। আমরা চাই, সাধারণ মানুষ তাদের ইচ্ছেমতো শান্তিতে নিরাপদে ভোট দিতে পারবেন, এই ধরনের পরিবেশ সরকারকে করতে হবে।
জেলা জামায়াতের আমির মো. আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ডা. আব্দুর রহীম সরকার, সিনিয়র নায়েবে আমির বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়ারেছ সরকার, জেলা সেক্রেটারি জহুরুল হক সরকার, সহকারী সেক্রেটারি সৈয়দ রোকনুজ্জামান প্রমুখ।
প্রায় দুই যুগ পর এ মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সবশেষ ২০০২ সালে জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী এ মাঠে তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে বক্তব্য দেন।