অবসরে যাওয়া বঞ্চিত ৭৬৪ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত
আওয়মী লীগ সরকারের আমলে বঞ্চনার শিকার ৭৬৪ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাকে উচ্চতর পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
গতকাল মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপদেষ্টা পরিষদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানান।
শফিকুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে প্রত্যেক কর্মকর্তার জন্য প্রযোজ্য তারিখ থেকে উচ্চতর পদে পদোন্নতির আদেশ জারি করা যেতে পারে।’
প্রেস সচিব জানান, ১১৯ জনকে সচিব, ৪১ জনকে গ্রেড-১ (সচিবের সমান বেতন গ্রেড), ৫২৮ জনকে অতিরিক্ত সচিব, ৭২ জনকে যুগ্ন সচিব এবং চারজনকে উপ-সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। তাদের বেতনভাতা খাতে সরকারের ব্যয় হবে ৪২ কোটি টাকা এবং অবসরভাতা বাবদ ১৩ কোটি টাকা।
এক প্রশ্নের উত্তরে শফিকুল আলম বলেন, ‘প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আন্দোলনের বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহ দেখছি। এ বিষয়টি জনপ্রশাসন ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব দেখভাল করছেন। সরকার নিবিড়ভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘আমরা কোনো সরকারি চাকরিজীবীকে বঞ্চিত করতে চাই না। সবার প্রতি সুবিচার করতে চাই।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের বিষয়গুলো স্বচ্ছতার সঙ্গে সবাইকে জানানো হচ্ছে। ফলে অনেকে এটা নিয়ে কথা বলছেন। এর মানে এই নয় যে এটা নিয়ে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। বিশৃঙ্খলার বিষয়টি আমি মানতে চাচ্ছি না। গত চার মাসে আমাদের প্রশাসন যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্থিতিশীল হয়ে গেছে। ফলে আমি মনে করি পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।’
প্রেস সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে যে সব তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে, তার সঠিক ব্যাখা দেওয়া উচিত। বিশেষ করে মামলার যেসব পরিসংখ্যান ছাপা হচ্ছে, তার অধিকাংশই জুলাই-আগষ্টে সংঘটিত হওয়া হত্যাকাণ্ডের মামলা। এ ব্যাপারে একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে একটি টেলিভিশনে কয়েকজনকে চাকরিচ্যুতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে শফিকুল আলম বলেন, সরকার কাউকে চাকরিচ্যুত করতে বলেনি। সরকারের বাইরের কেউ করলে এর দায় সরকার নেবে না। অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যমের ওপর কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করে না বলে তিনি দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির বিষয়ে প্রেস সচিব জানান, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সরকার একটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তিতে যাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের বিকল্প বড় বাজার তৈরি হবে।
শফিকুল আলম বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ রপ্তানি উত্তর আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপ কেন্দ্রিক। তাই বিকল্প বাজার হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়া অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। এ ছাড়া চীনের কয়েকটি কোম্পানি বাংলাদেশের সৌর বিদ্যুতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলে জানান তিনি।