ভারত নদীকে ভূরাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে : মনজুর আহমেদ
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের চারপাশে ভারতের পঞ্চাশটির মতো ড্যাম, ব্যারেজসহ হাইড্রোলিক অবকাঠামো রয়েছে। যার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে নদীর ন্যায্য পানির হিস্যা থেকে বঞ্চিত করছে। মূলত ভারত নদীকে ভূরাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা বিষয়ক সংগঠন তরী আয়োজিত ‘নদী সম্মিলনে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে মনজুর আহমেদ চৌধুরী এসব কথা বলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীর পূর্বপাড় কাশিনগর এলাকায় ‘নদী রক্ষায় একসাথে’ স্লোগানে এই সম্মিলনের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ভারত অবিশ্বস্ত বন্ধু উল্লেখ করে মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ভারতকে নদীর ব্যাপারে বিশ্বাস করা যায় না। তাই বাংলাদেশকে পানির বিষয়ে ভারতের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে স্বনির্ভরশীল হতে হবে। ভারতের সাথে বাংলাদেশের পঞ্চাশটিরও বেশি আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে। তবে এসব নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে দুই দেশের চুক্তি নিয়ে ভারতের আগ্রহ খুবই কম। যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তাই ভারতের উপর নির্ভরশীল না হয়ে বর্ষাকালে পানি ধরে রাখতে ডেল্টা প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, ব্রহ্মপুত্রের পানি ভারত তার পশ্চিমাঞ্চলের ট্রান্সফার করতে চায়, যেটি বাংলাদেশের জন্য সমূহ বিপদ। ভারত থেকে যেসব নদীর শাখা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তাদের মধ্যে ব্যাপক পরিমাণ পানি বঙ্গোপসাগরে জমে। বর্ষাকালে ১ লাখ ৪০ হাজার কিউবিট মিটার পানি এসব নদী দিয়ে বহমান হয়। তবে সেসব নদী থেকে গ্রীষ্মকালে ৫ শতাংশ পানি বাংলাদেশে আসে। ভারত এগুলোকে ভৌগলিক রাজনীতির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।
এ সময় বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় দেশব্যাপী নদীর দখল দূষণ বন্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা বাস্তবায়নের দাবি জানান মনজুর আহমেদ চৌধুরী।
নদী সম্মিলনে তরীর আহ্বায়ক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাংবাদিক ও লেখক আমিন আল রশীদ, বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনির হোসেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট এ কিউ এম সোহেল রানা।