‘আমি এখন আমার অবুঝ দুই সন্তানকে নিয়ে কীভাবে বাঁচব’
‘মাছ ধরেই আমার স্বামী আমাদের সংসার চালাতো। আজ সে এই পৃথিবীতে নাই। আমি এখন আমার অবুঝ সন্তান দুটিকে নিয়ে কীভাবে বাঁচব’? এভাবেই বিলাপ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার গচাপাড়া গ্রামে মাছ ধরতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরে আসা জেলে বিপুল মন্ডলের স্ত্রী মনি মন্ডল।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ভোরে কোটালীপাড়া-পয়সারহাট খালের গচাপাড়া এলাকা থেকে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ জেলে বিপুলের মরদেহটি উদ্ধার করে। জেলে বিপুল মন্ডল উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের গচাপাড়া গ্রামের মৃত মতিলাল মন্ডলের ছেলে।
জানা গেছে, আজ ভোরে এলাকাবাসী কোটালীপাড়া-পয়সারহাট খালের গচাপাড়া গ্রামে ভাসমান অবস্থায় জেলে বিপুলের লাশ দেখতে পেয়ে কোটালীপাড়া থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় লাশটি উদ্ধার করে।
আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল কালাম মিয়া বলেন, গত শনিবার রাতে কোটালীপাড়া-পয়সারহাট খালে মাছ ধরতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খালটিতে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন বিপুলের সন্ধানে তল্লাশি চালিয়েও বিপুলকে পায়নি। আজ সোমবার ভোরে মুসল্লিরা নামাজ শেষে যাওয়ার সময় খালে একটি ভাসমান লাশ দেখতে পায়। এরপর আমরা পুলিশকে খবর দেই।
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, উদ্ধারকৃত লাশটি বিপুলের বলে শনাক্ত করেছে তার পরিবার। বিপুল এর আগে দুইবার স্ট্রোক করেছিল বলে তার পরিবার জানিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মাছ ধরতে গিয়ে স্ট্রোকজনিত কারণে পানিতে পড়ে সে মারা যায়। বিপুলের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকার কারণে মরদেহটির ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বিপুলের এমন মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ওই পরিবারকে সরকারিভাবে সহযোগিতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাজাহান সিরাজ বলেন, বিপুল মন্ডল আমাদের একজন তালিকাভুক্ত মৎস্যজীবী ছিলেন। তার এমন মৃত্যু দুঃখজনক। আমরা এই অসহায় পরিবারের জন্য সরকারিভাবে সহযোগিতার চেষ্টা করবো।