রেললাইনের পাশে ঝুঁকিপূর্ণ মাছ বাজার
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/12/0.jpg)
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার রেললাইনের পাশে প্রতিনিয়ত বসে মাছের বাজার। রেললাইনের দুপাশ দিয়ে অল্প জমিতে গড়ে ওঠা মাছ বাজারটি ক্রমেই বড় পাইকারি হাটে পরিণত হওয়ায় মাছবাজারটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাজারে আতঙ্ক নিয়ে ব্যবসা করছেন মাছ ব্যবসায়ীরা ।
বারবাজারের রেললাইনে কাটা পড়ে ২০২৩ সালে ৫ জুলাই আব্দুল খালেক (৯০) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়, পরের বছর ২০২৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিরাপদ স্থানে বাজারটি সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সব মহলে ধরনা দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। রেল কর্তৃপক্ষও বারবার দায় এড়িয়ে গেছে।
সরজমিনে দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ মাছের পাইকারী হাট বারবাজার হাট থেকে প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছ বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় মাছ ক্রয় বিক্রি। সকালে রেললাইনের পাশে মাছের হাট শুরু হলেও পরে তা রেল লাইন পর্যন্ত চলে যায়।
জানা যায়, ১৯৩৬ সালে স্থাপিত রেললাইনটি ঘিরে এ মাছ বাজার গড়ে উঠেছে। সময়ের সঙ্গে বাজারের আকার হয়েছে বৃহৎ আর ৮৯ বছরে এ বাজারটি বড় পাইকার হাটে পরিণত হয়েছে।
বারবাজার মাছ হাটের মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল ওহাব বলেন, ‘কেনাবেচার সময় হঠাৎই শুনি ট্রেনের হর্ন বাজছে। তখনই আমরা সরে যাই। এমনও অনেকদিন হয়েছে ট্রেনের হর্ন শুনতে পাইনি। পাশের একজন শরীরে টাচ করেছে সরে যাওয়ার জন্য।’
বারবাজার মাছ হাটের পাইকারী ব্যবসায়ী শরত বিশ্বাস বলেন, ‘রেললাইনে মাছ বাজার না হয়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে হলে ভালো হতো। আমরা এখানে মাছ কেনার জন্য এলে অনেক ভয়ে থাকি। কারণ ট্রেন আসার সঠিক সময় আমরা জানি না।’
১৮৬১ সালের রেল আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী, রেললাইনের দুই পাশের ২০ ফুটের মধ্যে রেল সংশ্লিষ্ট নির্দিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া বাইরের কেউ প্রবেশ করতে পারবে না, এমনকি গরু-ছাগলের প্রবেশও নিষেধ। গরু-ছাগল রেললাইনে ঢুকে পড়লে তা নিলামে বিক্রি করার বিধান আছে। একই ধারায় বলা হয়েছে, রেললাইনের ২০ ফুটের মধ্যে ২৪ ঘণ্টা ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। একইভাবে রেল দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে রেল কর্তৃপক্ষ মামলা করতে পারেন।
রেললাইনের কাছে মাছ বাজার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কালীগঞ্জের বারবাজার রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোবাস্বের হোসেন বলেন, ‘রেলের তরফ থেকে অনেকবার মাইকিং করে রেললাইনে বাজার বসাতে নিষেধ করেছি। তবে জনসচেতনতা কারও মধ্যে আসেনি। রেললাইনে ঝুঁকিপূর্ণ বাজার নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশাকরি, সব বিষয়ের সমাধান হবে।’