নির্বাচন যত বিলম্ব হবে দেশের সমস্যা তত বাড়বে : তারেক রহমান

‘নির্বাচন যত বিলম্ব হবে দেশের সমস্যা তত বাড়বে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রাজধানীতে এক মতবিনিময় সভায় সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় জরুরি প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই মন্তব্য করেন।
রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর উদ্যোগে চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আলোকচিত্র সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সাথে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে আহত সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে তারেক রহমান আরও বলেন, একটি বিষয় এখানে সকলে বলেছেন, যত দেরি হবে নির্বাচনের তত বেশি বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের ডালপালা বাড়তে থাকবে; বিভিন্নভাবে সমাজের মধ্যে, বিভিন্ন কথা-বার্তায়। এখনই বিভিন্ন রকম কথাবার্তা আস্তে আস্তে ছড়াচ্ছে। যারা পালিয়ে গেছে এই দেশ থেকে তারা দেশের মানুষের বিপুল পরিমাণ সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছে। অবশ্যই তারা সেই সম্পদগুলো সেই ষড়যন্ত্রের পেছনে ব্যয় করবে।
তারেক বলেন, কাজেই দেশকে যদি একটি স্টেবল সিচ্যুয়েশনে ভেতরে আনতে হয়, দেশকে যদি ঐক্যবদ্ধভাবে ধরে রাখতে হয়, দেশকে যদি একটি স্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে ধরে রাখতে হয়, তবে দায়িত্ব অবশ্যই জনগণের হাতে ছেড়ে দিতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, আমরা সকল সময় মনে করি, এদেশের মূল মালিক বাংলাদেশের জনগণ। কাজেই বাংলাদেশের জনগণের সেই অধিকার আছে এই দেশ নিয়ে কি হবে না হবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার একমাত্র ক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষের। সমগ্র পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলতে যা বুঝায় সেটি হচ্ছে নির্বাচন… নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ তাদের মতামত ব্যক্ত করে থাকেন… সেটি ইউনিয়ন পরিষদ হোক, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের মতামত প্রকাশ করে থাকে।
সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, আমরা আড়াই বছর আগে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। এই ৩১ দফার নিয়ে দেশের মানুষের ঘরে ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করছি, মানুষকে বলার চেষ্টা করছি আমাদের সেই ৩১ দফা নিয়ে। এ্রর মূল কথা বৈষম্যহীন একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ; যে বাংলাদেশের প্রত্যাশা প্রত্যেকটি মানুষের। যেখানে মানুষের রাজনৈতিক অধিকার থাকবে, যেখানে মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থাকবে। কারণ একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা না যায়, সব কিছুই নষ্ট হয়ে যাবে।
তারেক রহমান আরও বলেন, আজকে যেভাবে দুর্ঘটনা ঘটে বাসে-গাড়িতে, যে পরিমাণ মানুষ এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়, যে পরিমাণ মানুষ বিভিন্ন কারণে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এটি একটি অস্বাভাবিক ব্যাপার…এই সমস্যার সমাধান হওয়া প্রয়োজন। আজকে দেশের বহু মানুষ সঠিকভাবে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে একটি ‘জনগণর প্রতিনিধিত্বশীল সরকার’প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তারেক রহমান বলেন, দেশের অনেক মৌলিক সমস্যা আছে যার একটি ব্যাসিক সমাধানের পরিকল্পনা আমাদের ৩১ দফায় দিয়েছি। আমরা যদি মানুষের সমস্যার সমাধান করতে না পারি তাহলে উচ্চ কক্ষই বলুন, এক ব্যক্তি দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হবে না বলুন, আরও যথাযথ ক্ষমতার ভারসাম্য যত যাই বলি না কেনো দিন শেষে মানুষের কোনো উপকার হবে না।
গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার আলোকচিত্র সাংবাদিকদের প্রতি সহমর্মিতা এবং সম্মান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুম্মনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ সম্পাদক আশরাফউদ্দিন বকুল, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম মহসিন, সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার, জ্যেষ্ঠ ফটোসাংবাদিক বুলবুল আহমেদ ও তারিফ রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।