নতুন করে দেশ বিনির্মাণে ‘আশার আলো’ দেখছেন মির্জা ফখরুল

ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পরে নতুন করে দেশ বিনির্মাণে ‘আশার আলো’ দেখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এই প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর মরণোত্তর একুশে পদক প্রাপ্তি উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোকচিত্র সাংবাদিক শহিদুল আলম ও শিল্পী রোকেয়া সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, আজ আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। সেই ফ্যাসিবাদের অবসান হয়েছে... ফ্যাসিবাদ পালিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এদেশের রাজনৈতিক দলগুলো যে চেষ্টা করছে, তারা যে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে… সবশেষে ছাত্র-জনতার সমবেত প্রচেষ্টায় সেটা সম্ভব হয়েছে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আজকে একটা আশার আলো সবাই দেখছেন যে, আমরা নতুন করে বাংলাদেশকে গড়ে তুলব…। তবে এর জন্য সবাই আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন। সত্যিকার অর্থেই আমরা যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য দেশ তৈরি করতে পারি তার জন্য আমাদের একত্রে কাজ করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহসহ ১৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে ২০২৫ সালের একুশে পদক প্রদান করে। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব পদক তুলে দেন।
মাহফুজ উল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে মির্জা ফখরুল বলেন, মাহফুজ উল্লাহর প্রতি আমাদের সম্মান দেখানো তখনই সফল হবে যদি তাঁর আরাধ্য কাজটা করতে পারি। আমাদের অনেক বয়স হয়েছে এখন। এখানে সব নবীনরা আছেন, তরুণরা আছেন তারা দেশকে নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছেন। সেই চিন্তার মধ্যে কিন্তু সব সময়ই একটা জিনিস আমার কাছে মনে হয় এই কথাটা মনে সবারই মনে রাখা দরকার—মাহফুজ উল্লাহসহ এদেশকে সুন্দর করার জন্য যারা অবদান রেখেছে সবার অবদানগুলো যেন আমরা কখনো ভুলে না যাই।
প্রয়াত মাহফুজ উল্লাহ একজন ‘প্রগতিশীল’ ‘দেশপ্রেমিক’ ‘মেধাবী’ সাংবাদিক হিসেবে অভিহিত করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তিনি কালোকে কালো সাদাকে সাদা বলতে দ্বিধা করতেন না। মাহফুজ উল্লাহকে আমি মিস করি, সত্যিই মিস করি। তাকে হারানোটা সত্যিকার অর্থে আমাদের বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। তবে খুশি হয়েছি যে, তাকে মরণোত্তর রিকগনেশন (স্বীকৃতি) দেওয়া হয়েছে। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।
প্রয়াত মাহফুজ উল্লাহর বড় ভাই অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ‘র সভাপতিত্বে সাবাব রায়হান কবীরের সঞ্চালনায় এই আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, নজমুল হক নান্নু, রাষ্ট্র বিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মোর্শেদ, ওয়াশিংটনে নিযুক্ত প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী ও ডা. বজলুল গণি ভুঁইয়া, প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর পুত্র মোস্তফা হাবিব বক্তব্য দেন।