একটি বিদ্যুতের গ্রিড ঘিরে স্বপ্ন দেখছে লক্ষাধিক পরিবার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় প্রথমবারের মতো যুক্ত হয়েছে বৈদ্যুতিক গ্রিড। যার মাধ্যমে সরাসরি জাতীয় গ্রিড থেকে স্থানীয় গ্রিডের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পাবে উপজেলার প্রায় এক লাখ ২০ হাজার গ্রাহক। ফলে গ্রাহক ভোগান্তি কমে আসবে অনেকাংশেই।
জানা গেছে, বৃহৎ এই গ্রাহককে এত দিন কুমিল্লা বা ব্রাহ্মণবাড়িয়া গ্রিড থেকে সরবরাহ করা হতো বিদ্যুৎ। ফলে একটু বৃষ্টি কিংবা ঝড় তুফান এলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ পেত না গ্রাহকরা। কেননা, উপজেলার সাব-স্টেশনগুলোতে বিদ্যুৎ আসত প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরের গ্রিড থেকে। আর ঝড়ে বিদ্যুতের তারে গাছপালা পড়লেই অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যেত বিদ্যুৎ সরবরাহ।
আসন্ন রমজান মাসকে ঘিরে গ্রাহক পর্যায়ে এই গ্রিডকে ব্যবহারর লক্ষে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে পল্লি বিদ্যুতের কাছে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য অপারেশন শুরু করেছে পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ। গ্রিডটি থেকে উপজেলার দুটি সাব-স্টেশনে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। গ্রিডটি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলে গ্রাহক পর্যায়ে ভোল্টেজের তারতম্য, সিস্টেম ফল্ট বা ঝড়-বৃষ্টি হলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকার প্রবণতা কমে আসবে। কেন না গ্রিড থেকে সাব-স্টেশনগুলোর দূরত্ব হবে মাত্র দুই থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যেই।
পল্লী বিদ্যুতের গ্রিড সমস্যা নিয়ে কসবা পুরাতন বাজারের কম্পিউটার দোকানের গ্রাহক গোলাম জিলানী বলেন, গ্রিড মেইন্টেনেন্সের কথা বলে গত চার থেকে পাঁচ বছর ধরে পল্লীবিদ্যুৎ প্রতি শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ রাখত। আর একটু ঝড়-তুফান হলে তো কথাই নেই। তবে এবার যেহেতু নিজেদের এলাকায় গ্রিড পাচ্ছি, এখন আমরা নতুনভাবে স্বপ্ন দেখছি।
বাজারের আরেক ব্যবসায়ী মো. মহিউদ্দিন বলেন, আমি একজন চা-কফি বিক্রেতা। বিদ্যুতের প্রেশার মেশিন ব্যবহার করে আমি চা-কফি বানাই। তবে, শনিবার বিদ্যুৎ থাকে না বলে আমি দোকান খুলতেই পারি না। এতে আমি মারাত্মক লসের শিকার হচ্ছি। গ্রিডটি চালু হলে হয়তো এ সমস্যা থাকবে না এমনটাই আশা করছি।
গ্রিডটি পরিদর্শন করেছে পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের গ্রিড সংরক্ষণ বিভাগের কুমিল্লা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জসিম উদ্দিন। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, কসবা গ্রিডটির কমিশনিং করেছি এক মাস আগেই। তবে আজকে আমরা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে আমাদের গ্রিড থেকে ৩৩ কেভিতে পাওয়ার দেব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার মো. সাইদুর রহমান জানান, গ্রিডটি চালু হলে কসবার লক্ষাধিক গ্রাহকককে আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া বা কুমিল্লা গ্রিডের জন্য বসে থাকতে হবে না। এখন থেকে সরাসরি জাতীয় গ্রিড থেকেই তারা স্থানীয়ভাবে বিদ্যুৎ পাবে।
কসবা সদর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, গ্রিডটি চালু হলে গ্রাহকদের আমরা সঠিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারব। শনিবারে যেই রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য দিনব্যাপী বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকত, তা অনেকাংশেই কমে আসবে।