‘সেকেন্ড রিপাবলিক এবং গণপরিষদ নির্বাচন’ নিয়ে প্রশ্ন সালাহউদ্দিন আহমেদের

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘সেকেন্ড রিপাবলিক এবং গণপরিষদ নির্বাচন’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
আজ শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে এক আলোচনা সভায় সালাহউদ্দিন আহমেদ এই প্রশ্ন তুলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আমি পত্রিকায় দেখলাম, জাতীয় নাগরিক পার্টির অন্যতম লক্ষ্য সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠায় গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন। আমি সমালোচনা করতে চাই না। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই তার নিজস্ব কর্মপন্থা থাকবে, আদর্শ থাকবে, গঠনতন্ত্র এবং ঘোষণাপত্রে। কেউ সমাজতন্ত্র চায়, কেউ অন্য কিছু চায়, কেউ হয়তো ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়- এরকম অনেক কিছু থাকে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক ঘোষণাপত্রে। আমি নতুন বন্ধুদের বলতে চাই, সেকেন্ড রিপাবলিক! আমাদের বর্তমান রিপাবলিক কি অসুস্থ হয়ে গেছে? সেকেন্ড রিপাবলিক কখন হয়? রিপাবলিক হচ্ছে যেখানে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে তাদের একটা নমিন্যাল অথবা ইলেক্টেড হেড অব দি স্টেট থাকবে। সেটা কি আমাদের নেই?
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গণপরিষদ কেন হবে? যারা গণপরিষদের বিষয় সামনে আনছে, যারা সেকেন্ড রিপাবলিকের বিষয় সামনে আনছে, তারা হয় না বুঝে করছে অথবা বুঝে আমাদের এই রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, যারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলছে তাদের একটি মতলব আছে। কারণ ৫ আগস্টের ছাত্র গণঅভ্যুত্থান কি মেম্বার-চেয়ারম্যান ইলেকশনের জন্য হয়েছিল? দেশের পৌরসভা, উপজেলা চেয়ারম্যানদের নির্বাচনের জন্য কি ৫ আগস্ট হয়েছিল? তাহলে তারা কেন শুধু মেম্বার-চেয়ারম্যান ইলেকশনের জন্য এই দাবি তুলেছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উত্তরণের পথটা যত দীর্ঘায়িত করা যায় ততই বোধ হয় তাদের লাভ। কারো ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হবে, আর কারো কারো মনোবাসনা পূর্ণ হবে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা সেকেন্ড রিপাবলিকের ঘোষণা তাদের দলীয় ঘোষণাপত্রে রেখেছেন সেটা ওখানে থাক। যারা গণপরিষদের মধ্যে দিয়ে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে চান, সেটা আপনারা যখন পারবেন করবেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণে আর যাতে কোনো বিলম্ব না হয়, সেজন্য আমরা যাতে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখি এটাই আমাদের আহ্বান। যেকোনো মূল্যে রাজপথে গড়ে ওঠা ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যকে আমাদের টিকিয়ে রাখতে হবে।
রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে ‘ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (এনআরএফ) উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ত্যাগ ও নেতৃত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং সৈয়দ আবদাল আহমেদের সম্পাদিত ‘নন্দিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং এনআরএফ এর সদস্য সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সহ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর সহধর্মিণী বিথীকা বিনতে হোসাইন, এনআরএফের আহ্বায়ক ও ‘নন্দিত নেত্রী খালেদা জিয়া’ গ্রন্থের লেখক, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।