দেশে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের আহ্বান গণফোরামের

দেশে ধর্ষণ, খুন, অন্যায়, অত্যাচার ভয়াবহ আকার ধারণ করছে উল্লেখ করে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছে গণফোরাম। শনিবার (১৫ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে দলটির নেতৃবৃন্দ এই আহ্বান জানান।
সমাবেশে ভার্চুয়াল বক্তব্যে গণফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, দেশে ধর্ষণ, খুন, অন্যায়, অত্যাচার ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে মানুষ নিরাপদ ঈদ যাত্রা করতে ভয় পাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণফোরামের সভাপতি পরিষদের সদস্য সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে এক লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে উন্নতমানের ইফতার করেছেন ড. ইউনূস সাহেব। কিন্তু এ দেশের মানুষ সাধারণ ইফতার করতে পারে না। বিগত সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিল, যা আমাদের গলার কাঁটা, অনতিবিলম্বে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। মহাসচিবকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি খুলে বলুন।
মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নাই উল্লেখ করে সুব্রত চৌধুরী বলেন, ধর্ষিতরা বিচার পাচ্ছে না। ধর্ষণকারীরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে। আছিয়াসহ সকল নির্যাতিতের বিচার চাই। আমরা আর কোনো আছিয়ার আর লাশ দেখতে চাই না। বর্তমান সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত করপোরেট হাউজের মালিকদের বিচার না করে ব্যাংক থেকে নতুন করে অর্থ দেওয়ার ব্যবস্থা করছে।
সভাপতি পরিষদের সদস্য আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। পুলিশ বাহিনীর ওপর আক্রমণ হয়, পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনতাই হয়, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হয় না, সেনাবাহিনীকে মাঠে নামিয়ে কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না, এতে করে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। সাহসিকতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করুন। সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন করবেন না। যদি দেশ পরিচালনা করতে না পারেন, অনতিবিলম্বে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, খুন, ছিনতাই ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ কোনো ধরনের অন্যায় অত্যাচারের বিচার হচ্ছে না। অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও বিচার করা হয় না। ওরা প্রশাসনকে ভয় পায়। ছাত্রদের হাতে এখনও পাঠ্য বই পৌঁছায়নি। অবিলম্বে ছাত্রদের হাতে পাঠ্য বই দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
মিজানুর রহমান আরও বলেন,গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন জনআকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার করা যাবে। ক্ষমতাসীনরা সংবিধান বাতিল করে পুনর্লিখন করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের সকল চিহ্ন ও স্মৃতি মুছে ফেলতে চায়। এ অবস্থা চলতে থাকলে গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়ন করা দুরূহ হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, রওশন ইয়াজদানী, লতিফুল বারী হামিম, রফিকুল ইসলাম পথিক, মির্জা হাসান, মাসুদুর রহমান মাসুদ, মোহাম্মদ উল্লাহ মধু, আজম রূপু, হাবিবুর রহমান বুলু, নূরনবী, নাজমুল ইসলাম সাগর, আমিনুল ইসলাম, আশরাফ হোসেন, সাইফুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মজিবুল হক, অ্যাডভোকেট সাগরিকা ইসলাম, জাহান ঝুমু, সানজিদ রহমান শুভ প্রমুখ।