দুই কোটি ২৬ লাখ শিশু পেল ভিটামিন এ ক্যাপসুল

সারাদেশে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ শনিবার। এ ক্যাম্পেইনের আওতায় এক লাখ ২০ হাজার টিকাদান কেন্দ্রে প্রায় দই কোটি ২৬ লাখ শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। এতে ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।
এবার জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রায় দুই কোটি ২৬ লাখ শিশুকে এই ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ছয় থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের নীল ক্যাপসুল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের লাল ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।
এ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ভিটামিন ‘এ’ অভাবজনিত অন্ধত্বের হার এক শতাংশের নিচে কমে এসেছে এবং শিশু মৃত্যুর হারও কমেছে।
আজ শনিবার (১৫ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। বিএসএমএমইউর বহির্বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম এই ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করেন।
এ ছাড়া হবিগঞ্জে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান এই ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আমিনুল হক সরকার।
এ দিকে, রাঙামাটি সদর উপজেলাধীন মগবান ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড নতুন বাজার এলাকার দুর্গম পাহাড়ি গ্রামে এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা এর উদ্বোধন করেন। এক হাজার ২৩৮টি কেন্দ্রে এবার ৮৫ হাজারের অধিক শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের আওতায় আনা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এর উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. নুরুল আমীন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকিকুন নাহার, সদর ইউএইচএন্ডএফপিও ডা. শারমিন খন্দকার মুন, সিভিল সার্জন অফিসের এমওসিএস ডা. মো. রিয়াজুল ইসলাম ও জেলা ইপিআই সুপারিন্টেন্ডেন্ট মো. আব্দুল মোতালেব খান।
এ ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে নওগাঁ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার আয়োজনে সকাল ১০টায় নওগাঁ মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রে এক আলোচনা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। এ সময় নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা. মো. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুনির আলী আকন্দ প্রমুখ। পরে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস খাওয়ানোর ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন।
ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানার উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে এ ক্যাম্পেইন শুরু হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আবুল বাশার মো. সায়েদুজ্জান, মেডিকেল অফিসার ডা. ইফতেখায়রুল ইসলাম, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ কুমার সাহা প্রমুখ। জেলা প্রশাসক পরে মন্ডলপাড়া ও সালন্দরের দুটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
সকালে খাগড়াছড়ি শিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাতীয় পুষ্টিসেবা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সিভিল সার্জনের আয়োজনে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি পৌর প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা ও সিভিল সার্জন ডা. মো. ছাবের।
পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আয়োজনে সকাল ১০টায় মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. শফিউল আলম। এ সময় জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মাদ খালেদুর রহমান মিয়ার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মাদ আরেফীন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৪ সালে রাতকানা রোগ প্রতিরোধে শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো শুরু হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী সময়ে অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের মধ্যে রাতকানা রোগের হার ছিল ৪ দশমিক ১০ শতাংশ। বর্তমানে ভিটামিন এ এর অভাবে রাতকানা রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে।
জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বছরে দুইবার ৯৮ শতাংশ শিশুদের ভিটামিন এ খাওয়ানো হয়।