বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে চীনের সৌর প্যানেল জায়ান্ট লঙ্গি

বিশ্বের বৃহত্তম সৌর প্যানেল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান লঙ্গি বাংলাদেশে সৌর প্যানেল তৈরিতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর জন্য তারা বাংলাদেশে একটি অফিস স্থাপন করবে। আজ রোববার (১৬ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ তথ্য জানিয়েছেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ডিসেম্বরে বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় চীনা সৌর প্যানেল প্রস্তুতকারক বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে বাংলাদেশ সফর করেছেন।
অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে অর্থনৈতিক কেন্দ্রে পরিণত করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চীনা কোম্পানিগুলোকে তাদের উৎপাদন কেন্দ্র স্থানান্তরের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর পর তারা এই সফর করেন।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশ সফরকারী কোম্পানি সম্পর্কে বলেন, লঙ্গিসহ কমপক্ষে দুটি চীনা কোম্পানি দেশে অফিস এবং প্ল্যান্ট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা খুব শিগগিরই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে।
৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন শেষ হওয়ার পর থেকে চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বৃহত্তম বিনিয়োগকারী হিসেবে পরিণত হয়েছে।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীনের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলটি শিগগিরই কার্যকর হওয়ার আশা করা হচ্ছে, তাই কয়েক ডজন চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য লাইন আপ করেছে।
ইয়াও ওয়েন বলেন, চীনে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সরকারি সফর হবে দুই বিশ্বস্ত এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মধ্যে ৫০ বছরের দীর্ঘ সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
এ সময় অধ্যাপক ইউনূস চীনা বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানি করতে ইচ্ছুক কোম্পানিগুলোর জন্য দেশটি একটি শীর্ষ উৎপাদন কেন্দ্র হতে পারে। তিনি চীনা হাসপাতাল চেইনগুলোকে এখানে শীর্ষ ক্লিনিক স্থাপন বা তাদের বাংলাদেশি প্রতিপক্ষের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা তৈরি করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবাতে ব্যাপক বিনিয়োগের প্রয়োজন। চীনা হাসপাতাল চেইনগুলোর এখন এখানে হাসপাতাল নির্মাণের অনন্য সুযোগ রয়েছে বলেও জানান চীনা রাষ্ট্রদূত।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন দক্ষিণ চীনের কুনমিং শহরে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য চারটি হাসপাতাল উৎসর্গ করেছে। গত সপ্তাহে বাংলাদেশিদের একটি দল চিকিৎসার জন্য কুনমিং ভ্রমণ করেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। এই সফরের অধ্যাপক ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে। প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ববিদ্যালয়েও বক্তব্য রাখবেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রথম দ্বিপাক্ষিক বিদেশ সফরকালে, তিনি প্রাচ্যের দাভোস হিসেবে বিবেচিত বোয়াও ফোরামে যোগ দেবেন এবং বক্তব্য রাখবেন, যেখানে শীর্ষ নেতা এবং সিইওরা প্রতি বছর শীর্ষ বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য একত্রিত হন।
প্রধান উপদেষ্টা ২৮ মার্চ চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বৈঠকের পর দুই দেশ একটি যৌথ বিবৃতি জারি করবে।