ঈদে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে যেসব নির্দেশনা দিল অধিদপ্তর

আসন্ন ঈদুল ফিতরে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সারা দেশের হাসপাতালগুলোকে ১৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তর। আজ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) অধিদপ্তরের পরিচালকের (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) দপ্তর থেকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, ঈদুল ফিতরের ছুটির সময় হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থাপনার জন্য নিম্নলিখিত নির্দেশনা দেওয়া হলো :
জরুরি বিভাগে প্রয়োজনে অতিরিক্ত চিকিৎসক পদায়ন করে সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। জরুরি বিভাগ ও লেবার রুম, ইমারজেন্সি ওটি ও ল্যাব সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। কর্মস্থলে পর্যাপ্ত জনবল ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য ঈদের আগে ও পরে সমন্বয় করে জনবলকে পর্যায়ক্রমে ছুটি দিতে হবে। প্রতিষ্ঠানপ্রধান নিরবচ্ছিন্ন জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম ও জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ছুটি মঞ্জুর করবেন।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, সিভিল সার্জন, বিভাগীয় পরিচালককে অবহিত করে শুধু ঈদের ছুটিকালীন নিজ জেলার মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় জনবল সমন্বয় করতে পারবেন। হাসপাতালের অন্তবিভাগ ইউনিট প্রধানরা প্রতিদিন তাদের বিভাগীয় কার্যক্রম তদারকি করবেন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় জরুরি ল্যাব, এক্স-রে সেবা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সেবা চালু রাখতে হবে।
অধিদপ্তরের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগেই ছুটির শেষ সময় জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ, আইডি ফ্লুইড, কেমিক্যাল রি-এজেন্ট, সার্ভিক্যাল সামগ্রী মজুদ ও তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্টোর কিপার অথবা ছুটিকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টাফ অবশ্যই নিজ জেলা ও উপজেলায় অবস্থান করবেন। এ ছাড়া অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।
অগ্নি নির্বাপণ বিষয়ক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে উল্লেখ করে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ছুটিকালীন হাসপাতালের নিরাপত্তায় স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আগাম পত্র দিতে হবে।
ঈদের দিন কুশল বিনিময় করার নির্দেশনা দিয়ে প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের ছুটিকালীন সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানপ্রধান ছুটি নিলে অবশ্যই বিধি মোতাবেক কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাবেন এবং দায়িত্ব গ্রহণকারী কর্মকর্তা সব দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম ও মোবাইলফোন নম্বর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। প্রতিষ্ঠানপ্রধান ঈদের দিন রোগীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন তদারকি করবেন এবং রোগীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। বহির্বিভাগ একাধারে ৭২ ঘণ্টার অধিক বন্ধ রাখা যাবে না। এর ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
কোনো রোগী স্থানান্তর করার আগে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা এবং যাত্রাপথের চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়ে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সব বেসরকারি ক্লিনিক/হাসপাতাল রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের অধীনে সার্বক্ষণিক জরুরি ও প্রসূতি বিভাগ খোলা রাখবে। রেফার্ড রোগীদের ক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স প্রাপ্তির প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে হবে।
বিষয়টি অতীব জরুরি উল্লেখ নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, যেকোনো দুর্যোগ, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুমকে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করতে হবে।
মহাপরিচালকের অনুমোদনক্রমেই এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।