আরসার প্রধানসহ ছয়জন গ্রেপ্তার, ১০ দিনের রিমান্ড

রোহিঙ্গাদের স্বশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশনের (আরসা) প্রধান কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্মার ওরফে জুনুনিসহ ছয়জনকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকালে তাদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়। আদালতে তোলা হলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মঈনুদ্দিন কাদির শুনানি শেষে দুটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরির্দশক কাউয়ুম খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ১৭ মার্চ ভোরে অভিযান চালিয়ে তাদের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১।
গ্রেপ্তারেরা হলেন—মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মোশতাক আহমেদ (৬৬), ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান (২৪), মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের সলিমুল্লাহ (২৭), সলিমুল্লাহর স্ত্রী আসমাউল হোসনা (২৩) ও আরাকান রাজ্যের লে হাসান (১৫)। এসময় তাদের কাছ থেকে ২১ লাখ ৩৯ হাজার ১০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারেরা নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নাশকতামূলক অপরাধ কর্মকাণ্ড সংগঠিত করার জন্য গোপন বৈঠক করে আসছিল। এর মধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে আসামিরা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড সংগঠিত করার জন্য সিদ্ধিরগঞ্জে ভূমিপল্লী আবাসন এলাকার একটি বহুতল ভবনে গোপন বৈঠক করছে। পরে ১৭ মার্চ ভোরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব। আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজ মঙ্গলবার সকালে তাদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, পাঁচ রোহিঙ্গা নাগরিকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় র্যাব বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে।
মামলার অধিকতর তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুটি মামলায় ১০ দিন করে ২০ দিনের দিনের রিমান্ডের আবেদন করে তাদের আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে আদালত পাঁচ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের কাছে মাদকবিরোধী অভিযান চালায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ডিজিএফআইয়ের বিশেষ একটি দল। তখন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন রিজওয়ান রুশদী। গুলিবিদ্ধ হন র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সদস্য সোহেল বড়ুয়া। গুলিতে শূন্যরেখার আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা তরুণী সাজেদা বেগমও (২০) নিহত হন।
এ ঘটনায় গত বছরের ২৩ নভেম্বর রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ডিজিএফআই কক্সবাজার কার্যালয়ের মাঠ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন মামলা করেন। আরসার প্রধান কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্মার ওরফে জুনুনিকে প্রধান করে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৬৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর মামলার কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মাহাফুজ ইমতিয়াজ ৫১ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।